নগরের কাপাসগোলা মোড়ে খোলা ড্রেনে পড়ে ৬ মাস বয়সী শিশু শেহরিশের মর্মান্তিক মৃত্যুতে তার পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না– তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সেই সাথে শিশু শেহরিশের মৃত্যুতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে কেন বেআইনি, স্বেচ্ছাচারী ও সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী হবে না এবং কেন সকল খোলা ড্রেন অবিলম্বে ঢেকে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হবে না,-রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মো. বিচারপতি হামিদুর রহমানের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল সোমবার রুল জারি করে আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান। খবর বাসসের।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত ৪ জুন জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিটটি করেন। সে রিট অভিযোগ করা হয় যে, নগর পরিকল্পনা ও অবকাঠামো ব্যবস্থাপনায় চরম গাফিলতি ও দায়িত্বে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের উদাসীনতা বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদে প্রতিশ্রুত নাগরিকের জীবনের অধিকার ও নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে।
এই রিটে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকায় সমস্ত খোলা ড্রেন, খাল ও ঝুঁকিপূর্ণ জায়গার তালিকা প্রস্তুত করে, একটি পরিকল্পনা দাখিল পূর্বক ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশনা চাওয়া হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট ৭ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়। রিট করার পর আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, একটি ছয় মাসের শিশুর এমন করুণ মৃত্যু কেবল একটি দুর্ঘটনা নয়, এটি আমাদের নগর ব্যবস্থাপনার এক ভয়াবহ ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।
তিনি আরো বলেন, খোলা ড্রেন যেন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে, অথচ দায়ী সংস্থাগুলোর নির্লিপ্ততা বেদনাদায়ক ও অগ্রহণযোগ্য। আমি এই রিটের মাধ্যমে শুধু একটি পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার চাইছি না, বরং আমি চাইছি একটি টেকসই ও মানবিক নগর পরিবেশ, যেখানে কোনো শিশুর জীবন আর এভাবে ঝরে না পড়ে।