অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যেই দেশব্যাপী জঙ্গিবিরোধী নতুন সামরিক অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে পাকিস্তান। ইসলামপন্থি জঙ্গিদের শিকড় উপড়ে ফেলার লক্ষ্য নিয়ে এ অভিযান শুরু হচ্ছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি। পাকিস্তান এখন পূর্ণমাত্রার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মোকাবেলা করছে, তারমধ্যেই সম্ভাব্য এ ব্যয়বহুল অভিযানটি শুরু হচ্ছে। তবে এক বিশ্লেষক বলেছেন, এই অভিযান প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে দেরি করার অজুহাত হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে, আগামী মাসের মধ্যেই ওই নির্বাচনের আয়োজন করার চাপে আছে সরকার। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নভেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) বেইলআউট কর্মসূচী স্থবির হয়ে থাকায় পাকিস্তান ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে আছে, একই সময় সরকার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মধ্যে শুরু হওয়া রাজনৈতিক লড়াইয়ে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে দেশটি। খবর বিডিনিউজের।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৪ সালে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান পরিচালনা করেছিল পাকিস্তান। তখন এর পেছনে কয়েক শত কোটি ডলার খরচ হয়েছিল আর অভিযানের ফলে ১০ লাখেরও বেশি লোক বাস্তচ্যুত এবং কয়েকশ মানুষ নিহত হয়েছিল। নিরাপত্তা কমিটি জানিয়েছে, শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে এবং দেশটির সামরিক বাহিনীর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বৈঠকে দুই সপ্তাহের মধ্যে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের বিস্তারিত সুপারিশ করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা কমিটি বলেছে, পুরো জাতি ও সরকারকে নিয়ে একটি ব্যাপক সর্বাত্মক অভিযান শুরু করার বিষয়ে বৈঠকে সবাই একমত হয়েছে। ২২ কোটি জনসংখ্যার পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তানে গত কয়েকমাস ধরে জঙ্গি হামলা বেড়ে চলেছে, বিশেষ করে গত বছর জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক–ই–তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সরকারের আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে। চলতি বছর এই গোষ্ঠীটি ও তাদের উপদলগুলো দেশটিজুড়ে হামলার ঢেউ বইয়ে দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে পেশোয়ার শহরের একটি মসজিদে চালানো আত্মঘাতী বোমা হামলা অন্যতম। এ হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়, যাদের অধিকাংশ পুলিশ সদস্য।