ঝুট ও গার্মেন্ট কাপড়ের গোডাউনে আগুন

১৯ ঘণ্টায়ও আসেনি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

নগরীর আতুরার ডিপোতে ঝুট ও গার্মেন্টস পণ্যের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টায় আগুন লাগলেও দীর্ঘ ১৯ ঘণ্টার চেষ্টাতেও তা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন নেভানোর কাজ চলছিল বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আগুনে ৪ মালিকের কয়েক কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। দুর্ঘটনা কবলিত গোডাউনটি চট্টগ্রামের শীর্ষ শিল্পগ্রুপ এস আলমের বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আগুনে গোডাউনের ভাড়াটিয়া ইসমাইল হোসেন, মোবারক আলী, মো. আবছার ও সুমনের মালামাল পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আতুরার ডিপো এলাকার চিটাগাং পার্ক কনভেনশন হল অভ্যন্তরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পুরনো বহুতল ভবনের গোডাউনগুলো থেকে কুণ্ডলী পাকিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ করছে। আগুন লাগা ভবনগুলো বেশ পুরনো ও নড়েবড়ে। স্থানীয়রা জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত গোডাউনগুলোতে একসময় নাজিরিয়া অয়েল মিল ছিল। ব্যাংক ঋণ ও নানান দেনায় জর্জরিত হয়ে হাত বদলে মিলের পুরো সম্পদের বৃহৎ অংশের মালিক এখন চট্টগ্রামের শীর্ষ শিল্পগ্রুপ এস আলম। এখানে ছোট বড় ১১টি গোডাউন রয়েছে। তদ্মধ্যে চারটি পুড়ে গেছে। গোডাউনগুলোতে ঝুট কাপড়ের পাশাপাশি গার্মেন্টস কাপড়ও ছিল। ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন, এখানে স্টক লটের শীতের কাপড়ও মজুদ ছিল।
একটি গোডাউনের নিরাপত্তারক্ষী ফজল মিয়া বলেন, এগুলো পুরাতন গোডাউন। এখানে নাজিরিয়া অয়েল মিল ছিল। আগুনে চারজনের গোডাউন পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ইসমাইল হোসেন দাবি করেন, তার প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঝুটের পাশাপাশি পুড়ে যাওয়া গোডাউনে কাপড়ের মজুদ ছিল বলে জানান তিনি। ইসমাইল বলেন, এখানে আমার ৫টি গোডাউন রয়েছে। সবচেয়ে বেশি মালামাল রয়েছে আমার। আগুনে আমার একটি গোডাউন পুরোপুরি পুড়ে গেছে। এতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। করোনার আগে থেকে এখানে পণ্য মজুদ করা হয়। অল্প কদিন আগে শীতের কাপড়ও মজুদ করেছিলাম। তিনি বলেন, আমার গোডাউনে দেড়শ মতো শ্রমিক কাজ করে। এখন সবাই বেকার হয়ে পড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত মোবারক আলী বলেন, আমার ২৯ লাখ টাকার মালামালের সবই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে কথা হলে ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক ফরিদ উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে আগ্রাবাদ, বায়েজিদ বোস্তামি ও চন্দনপুরা ফায়ার স্টেশনের ১১টি গাড়ি ঘটনাস্থলে আসে। ইতোমধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ঝুট কাপড়ের ভেতরে আগুন রয়ে গেছে। আগুন আর ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই, তবে পুরোপুরি নেভাতে সময় লাগবে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সেখানে কোনো হতাহতের খবর পাননি বলে জানান তিনি।
রাত ১২টার দিকে কথা হলে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক নিউটন দাশ বলেন, পুরো আগুন এখনো নিভেনি। এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। ভবনগুলো বেশ নড়বড়ে। তাই বুঝেশুনে কাজ করতে হচ্ছে। এতে আগুন নেভানোর কাজ করতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে।
আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো আগুন নেভেনি। আগুন নেভানোর পর আমরা তদন্ত করে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতিক্ষতি নির্ধারণ করে প্রতিবেদন জমা দেব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটিকা পেয়ে উচ্ছ্বসিত স্কুল শিক্ষার্থীরা
পরবর্তী নিবন্ধতিনদিন পর মিলল শিশু কামালের মরদেহ