বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে জালিয়াতি, পণ্য খালাসের চেষ্টা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৬ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য খালাসের চেষ্টা করেছে ঢাকার চকবাজারের মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটি মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স পারমিট (সিপি) নিতে
www.mincomgov.com নামের ভুয়া ওয়েবসাইটটি খুলে। প্রকৃতপক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট হচ্ছে www.mincom.gov.bd।
জানা গেছে, গত ১১ অক্টোবর সিয়াম এন্টারপ্রাইজ কাস্টমসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সিপি দাখিল করে। একইসাথে ১৩ অক্টোবর এ সংক্রান্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠিও দাখিল করে প্রতিষ্ঠানটি। এতে বিএসটিআই-এর ছাড়পত্র এবং কাস্টমসের আরোপিত জরিমানা ও শুল্ক পরিশোধ সাপেক্ষে চালানটি ছাড় দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সিপি এবং চিঠি নিয়ে প্রথম থেকে সন্দেহপোষণ করেন কাস্টমস কর্তারা। পরবর্তীতে যাচাই বাছাই শেষে ভুয়া চিঠি এবং ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরির বিষয়টি নিশ্চিত হন কর্মকর্তারা।
কাস্টমস সূত্রে আরো জানা গেছে, অভিযুক্ত সিয়াম এন্টারপ্রাইজ চলতি বছরের শুরুর দিকে ১৩ হাজার ৫২০ কেজি চীনা বাদাম ও ৪ হাজার ৫১০ কেজি জলপাই আমদানির ঘোষণায় একটি চালান আমদানি করে। আমদানিকারকের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নগরীর আগ্রাবাদ বাদামতলীর খান এন্টারপ্রাইজ চালানটি খালাসের জন্য ২৩ এপ্রিল কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। কিন্তু গোপন খবরে সন্দেহজনক পণ্যের উপস্থিতির তথ্য থাকায় কাস্টমসের এআরআই শাখা চালানটির খালাস স্থগিত করে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করে। পরীক্ষায় ২১ হাজার ৬০ কেজি শিশুখাদ্য গুঁড়োদুধ পাওয়া যায়। ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য আমদানি করায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকারককে ৬৬ লাখ টাকা ব্যক্তিগত ও ১০ লাখ টাকা বিমোচন জরিমানা দেওয়ার আদেশ দেয়। আমদানি পণ্যের চালানটি খালাসের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা আমদানি রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের সিপি কাস্টমসে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার নূর-এ হাসনা সানজিদা অনসূয়া বলেন, আমদানিকারক প্রথমত মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি করে দ্য কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর ধারা ৩২ এবং দ্য ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট (কন্ট্রোল) অ্যাক্ট, ১৯৫০ এর সেকশন ৩ (১) লংঘন করেছেন। অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি, ক্লিয়ারেন্স পারমিট এবং চিঠি নিয়ে আমাদের কর্মকর্তাদের প্রথম থেকে সন্দেহ হয়। পরে আমরা যাচাই বাছাই করে দেখেছি আমদানিকারক অসদুপায় অবলম্বন করে কাজটি করেছে। চিঠিতে মন্ত্রণালয়ের যে উপ-সচিবের স্বাক্ষর রয়েছে আমরা তার সাথেও কথা বলেছি। তিনি নিশ্চিত করেছেন এই চিঠি ইস্যু করেননি। আসলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমদানিকারক বরাবর একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। সেই চিঠিতে জানানো হয়েছে, ঘোষণা বহির্ভূত আমদানিকৃত পণ্যটি শিশুখাদ্য ও বিএসটিআই’র আওতায় শর্তযুক্তভাবে আমদানিযোগ্য হওয়ায় বিদ্যমান আমদানি নীতি আদেশের চতুর্থ অধ্যায়ের ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদের বিধানসমূহ প্রতিপালিত হয়নি বিধায় সিয়াম এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে সিপি ইস্যু করার কোনো সুযোগ নেই। ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে কাস্টমসের সঙ্গে প্রতারণা করায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআরও ২৩ মৃত্যু শনাক্ত ১৩০৮
পরবর্তী নিবন্ধকবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা টোকন ঠাকুর গ্রেপ্তার