২৫ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে ২০৬২ কোম্পানি

শিল্প-সেবাখাতে প্রণোদনা

| বৃহস্পতিবার , ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

শিল্প ও সেবাখাতে বড় ঋণগ্রহীতাদের জন্য দেওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে প্রায় দুই হাজার ৬২টি বৃহত্তম কোম্পানি স্বল্প সুদে ২৫ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংকগুলো দ্রুত ঋণ বিতরণ ব্যবসায় খাতে চলমান পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। যা মহামারির কারণে বড় ধাক্কা খেয়েছিল। কেন্দ্র্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তহবিলের ৭৭ দশমিক ১৫ শতাংশ বা ৩৩ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। খবর বাংলানিউজের।
তবে ঋণগ্রহীতা কোম্পানিগুলো প্রণোদনা তহবিলের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তাৎক্ষণিকভাবে একটি গবেষণা করা উচিত বলে মনে করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, প্রণোদনা তহবিল অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক ফলাফল এনেছে। তাতে সন্দেহ নেই। তবে তহবিলটি সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে কিনা, তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
ব্যাংকগুলোকে চলতি মাসের মধ্যে প্রণোদনা তহবিলের ঋণ বিতরণ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বলা হয়েছিল। তবে ১৮টি ব্যাংক এখনও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবু ফারাহ মো. নাসের বলেন, যারা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি, তাদের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ বন্ধ করে যারা ভালোভাবে বিতরণ করেছে, তাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। তিনি বলেন, আর্থিক খাতের দ্রুত পুনরুদ্ধারের স্বার্থে যেকোনো মূল্যে প্রণোদনা তহবিলের ঋণ বিতরণ অক্টোবর মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আর্থিক খাত ৬০ থেকে ৭০ ভাগ পুনরুদ্ধার হয়েছে। বাকিটুকু উদ্ধার নির্ভর করছে প্রণোদনা তহবিলের ওপর। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাত প্রণোদনা তহবিলের অনেক বেশি সমর্থন পেয়েছে। যা আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকের থেকে পুরো পরিবর্তন উপভোগ করতে পারে।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক খাতে প্যাকেজের প্রভাব পরিমাপ করতে একটি উপযুক্ত সংস্থা নিয়োগ করতে পারে। ব্যাংকিংখাত বছরের পর বছর ধরে করপোরেট প্রশাসনের অভাব বয়ে বেড়াচ্ছে এবং কিছু ব্যাংকের দুর্বল আর্থিক স্বাস্থ্যের জন্য বড় ঋণগ্রহীতারা মূলত দায়ী।
আবু ফারাহ মো. নাসের বলেন, প্রণোদনা তহবিলের অর্থ বিতরণের পর আমরা গবেষণা করব। বিতরণ করা তহবিলের মধ্যে ব্যাংকগুলো গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের জন্য ২০ হাজার ৫৭ কোটি টাকা এবং চলতি মূলধন হিসেবে পাঁচ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা দিয়েছে।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন একটি বিশেষ মনিটরিং সেলের মাধ্যমে তহবিল বিতরণ তদারকি করছে। ফলে ব্যাংকগুলো দ্রুত বিতরণ সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করেছে।
চলতি বছরের ১২ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক এই প্রণোদনা তহিবল গঠন করে। তহবিল থেকে ২০১৯ সালের হিসেবে চলতি মূলধন বাবদ ৩০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। প্রণোদনা তহবিল থেকে উপকারভোগীরা নয় শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন। ব্যাংকগুলো চার দশমিক পাঁচ শতাংশ ভর্তুকি পাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণোদনা প্যাকেজটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃতফসিল স্কিমও গঠন করেছে, যা নগদ-ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকিংখাতে ব্যাপক সহায়তা করেছে। পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের আওতায় ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চার শতাংশ সুদে তহবিল পাবে। তবে এই তহবিল পেতে হলে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে প্রত্যেকটি ঋণের ৫০ শতাংশ বিতরণ করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘কতোটুকু নিয়ে গেছো’
পরবর্তী নিবন্ধহুয়াওয়ের কাছে পণ্য সরবরাহের লাইসেন্স পেল ইনটেল