চমেক হাসপাতালে হৃদরোগী বেড়েছে ৩০ শতাংশ

তাপদাহের প্রভাব একটি এনজিওগ্রাম মেশিন নষ্ট, জরুরি সেবা পাচ্ছে না অনেক রোগী

জাহেদুল কবির | বুধবার , ১ মে, ২০২৪ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

দেশজুড়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। এই তাপদাহে গরমজনিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপের পাশাপাশি হাসপাতালে বাড়ছে হৃদরোগীও। গত এক সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে হৃদরোগী বেড়েছে ৩০ শতাংশ। চিকিৎসকরা বলছেন, গরম বাড়ার কারণে অনেক বয়স্ক ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া অনেক পুরনো রোগী বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। হঠাৎ করে রোগী বাড়ার কারণে চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষ করে অনেক রোগীর জরুরি ভিত্তিতে এনজিওগ্রাম কিংবা রিং লাগানোর প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু হৃদরোগ বিভাগের দুটি এনজিওগ্রাম মেশিনের একটি আড়াই বছর ধরে নষ্ট থাকায় জরুরি সেবা পাচ্ছে না অনেক রোগী। এই পরিস্থিতিতে বিত্তবানরা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালক্লিনিকে চিকিৎসা নিলেও বিপাকে পড়ছেন দরিদ্র রোগীরা। মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও অনেক রোগী এনজিওগ্রাম কিংবা রিং লাগাতে পারছেন না। এতে অনেক রোগী মারাও যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৯৮ সালে চমেক হাসপাতালে ৬টি শয্যা নিয়ে হৃদরোগ বিভাগ চালু হয়। ধীরে ধীরে সেটি ৮০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তবে যেহেতু চট্টগ্রাম অঞ্চলে হৃদরোগীর প্রকোপ বেশি তাই এই সংখ্যাটি যে একেবারে অপ্রতুল তা প্রমাণিত হতে সময় লাগেনি। বর্তমানে প্রায় সময় শয্যা সংখ্যার আড়াই থেকে তিন গুণ রোগী ভর্তি থাকে। ফলে সেবার মানের দিক থেকেও প্রায় সময় ধীরগতির অভিযোগ ওঠে। বর্তমানে প্রায় সব বিভাগে অধ্যাপক পদ থাকলেও হৃদরোগ বিভাগে নেই কোনো অধ্যাপক পদ। বর্তমানে বিভাগে চারজন সহযোগী অধ্যাপক, ৮ জন সহকারী অধ্যাপক ও একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট এবং তিনজন কনসালটেন্ট কর্মরত আছেন। তবে হাসপাতালে অনুমোদিত পদ আছে একজন সহযোগী অধ্যাপক ও দুজন সহকারী অধ্যাপকের। বাকিরা সবাই সংযুুক্তিতে কাজ করছেন।

ফটিকছড়ি থেকে আসা রোগীর স্বজন ইমরান হোসেন বলেন, গত সোমবার রাতে আমার বাবা হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যান। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ইসিজি করার পর হৃদরোগ ধরা পড়ে। তখন চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎসক এনজিওগ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সিরিয়াল পাওয়া নিয়ে চিন্তায় আছি। শুনেছি, আমাদের আগে অনেক রোগীর সিরিয়াল রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে খরচও বেশি। চাইলেই তো আর সেখানে পরীক্ষা করাতে পারছি না।

চমেক হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. রিজোয়ান রেহান আজাদীকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বাড়ছে। আমাদের চিকিৎসকরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

চমেক হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. আশীষ দে আজাদীকে বলেন, গরম বাড়ার পর থেকে হৃদরোগ বিভাগেও রোগীদের চাপ বাড়ছে। আমাদের হাসপাতালে অনুমোদিত শয্যা আছে ৮০টি। কিন্তু বর্তমানে রোগী থাকছে তিন গুণ বেশি। বিশেষ করে একটি এনজিওগ্রাম মেশিন দীর্ঘ সময় ধরে নষ্ট থাকার কারণে অনেক রোগীর এনজিওগ্রাম, রিং লাগানো, পার্মামেন্ট পেসমেকার স্থাপনের কাজ সঠিক সময়ে করতে পারছি না। এতে অনেক রোগীর জীবন সংকটাপন্ন হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলায়ন্স ক্লাবের ২৭ তম জেলা কনভেনশন ৩ ও ৪ মে
পরবর্তী নিবন্ধআবহাওয়া অনুকূল, দ্রুত পাকছে ধান