১৫ তলা ক্যান্সার ভবনে কী থাকবে

নির্মাণ কাজ উদ্বোধন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১০ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:৫৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নতুন ১৫ তলা ক্যান্সার ভবনের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সকালে ভিডিও কনফারেন্সে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ভবনের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন তিনি। আগের নির্ধারিত স্থানেই (বর্তমান ক্যান্সার ওয়ার্ডের পাশে ক্যান্টিন সংলগ্ন খালি জায়গাটিতে) ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভার্চুয়ালি ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. মো. ইসমাইল খান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসান, পুলিশের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর, সিএমপি কমিশনার সালেহ্‌ মোহাম্মদ তানভীর, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার, চমেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম প্রমুখ চট্টগ্রাম থেকে যুক্ত ছিলেন।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, জাতীয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ, বিএমএ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ডা. সেখ সফিউল আজম, বিএমএ চট্টগ্রামের সভাপতি মুজিবুল হক খান, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান, চমেক উপাধ্যক্ষ ডা. হাফিজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, চমেক হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ মো. ইউসুফ, কিডনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা, হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. আশীষ দে, মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. এম এ হাসান চৌধুরী, নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী, নিউরোমেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামান, কার্ডিয়াক সার্জারি প্রধান অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাসান, ক্যান্সার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এম এ আওয়াল, সহকারী অধ্যাপক ডা. আলী আজগর চৌধুরী, চমেক হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক ইনসাফি হান্নাসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বক্তব্য রাখেন। পরে প্রধান অতিথি হিসেবে চট্টগ্রামসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশেষায়িত ১৫ তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামসহ ৮টি বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একশ শয্যার একটি করে ক্যান্সার ইউনিট স্থাপনে এ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৯ সালে। ডিপিপি অনুযায়ী একশ শয্যার ক্যান্সার ইউনিট স্থাপনের জন্য ২টি বেইজমেন্ট (বাংকার)সহ ১৫ তলা বিশিষ্ট একটি করে ভবন নির্মাণের সংস্থান রয়েছে। তবে পরবর্তীতে একশ শয্যার বিশেষায়িত ক্যান্সার ইউনিটের পরিবর্তে সমন্বিত ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ বিভাগের জন্য এ ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। প্রাথমিকভাবে ভবনটিতে ৪৬০ শয্যা সংস্থানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে গণপূর্ত বিভাগ।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নতুন এ ভবনে ক্যান্সার ইউনিটের পাশাপাশি কিডনি ও হৃদরোগ বিভাগেরও ঠাঁই হচ্ছে। সরকারি পর্যায়ে ভিন্ন একটি প্রকল্পের অধীনে নতুন করে ৫০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের কথা রয়েছে চমেক হাসপাতালে। এই ডায়ালাইসিস সেন্টারটিও নতুন ক্যান্সার ভবনে স্থাপন করা হবে। নতুন ভবনের চারটি ফ্লোর কিডনি বিভাগ ও ডায়ালাইসিস সেন্টারের জন্য বরাদ্দ থাকছে। এছাড়া সিসিইউসহ হৃদরোগ বিভাগের জন্য বরাদ্দ থাকছে আরো চারটি ফ্লোর। সব মিলিয়ে ৭টি ফ্লোর বরাদ্দ পাচ্ছে ক্যান্সার ইউনিট।
১৫ তলা ভবনে যা থাকছে : বেইসমেন্ট-২ হতে ৭ম তলা পর্যন্ত ১৮০ শয্যা বিশিষ্ট ক্যান্সার ইউনিট। ৮ম হতে ১১ তলা পর্যন্ত ১৬৫ শয্যার কিডনি ও কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার। ১২ হতে ১৫ তলা পর্যন্ত ১১৫ শয্যার কার্ডিয়াক (হৃদরোগ) বিভাগ। ভবনে ৯টি লিফটের সংস্থানের কথা উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া দেড় হাজার কেভিএ ক্ষমতা সম্পন্ন ২টি সাব-স্টেশন এবং ৫০০ কেভিএ ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি অটো জেনারেটর, ফায়ার হাইড্রেন্ট, গভীর নলকূপ প্রভৃতি থাকছে এ ভবনে। চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, নির্মাণ কাজ শুরু করতে এরই মধ্যে নির্ধারিত স্থানে থাকা বিভিন্ন স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ। ভবনটির নির্মাণ কাজ দুই বছরের মধ্যে শেষ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
পরবর্তী নিবন্ধবড় জনসমাগম এড়িয়ে চলুন