বড় জনসমাগম এড়িয়ে চলুন

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ১০ জানুয়ারি, ২০২২ at ৭:০০ পূর্বাহ্ণ

ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ থেকে বাঁচতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি বিশেষভাবে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশে ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। কিডনি ও হার্টের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। এই ব্যাপারগুলো যখন বেশি দেখা যাচ্ছে, তখন জনগণকে বলব যেসব স্বাস্থ্যবিধি মানলে সুস্থ থাকা যায়, সেগুলো মেনে চলুন। খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে সব ব্যাপারে সবাইকে ‘একটু বিশেষভাবে সচেতন’ থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল রোববার সকালে চট্টগ্রামসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে যুক্ত হন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, এদেশের মানুষ কারও কাছে হাত পেতে চলবে না। পরনির্ভরশীল না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হবে। সেভাবেই আমরা আমাদের দেশকে গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, জনগণের মাঝে ক্যান্সার চিকিৎসা সহজলভ্য করতে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে হৃদরোগ, কিডনি ও ক্যান্সার রোগীদের সেবা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজেই আমরা চাই যে আমাদের দেশের মানুষ এগিয়ে যাবে।
এ প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রুত এবং মানসম্পন্ন কাজ যেন হয়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। দেশের মানুষের কাছে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
চিকিৎসকদের গবেষণায় দৃষ্টি দেওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, নামী-দামি চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবা দিতেই ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু কিছু সময় গবেষণার দিকে নজর দিলে দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু, পরিবেশ সবকিছু মিলিয়ে এই দেশের মানুষের কী কী ধরনের রোগবালাই হয় এবং তার প্রতিরোধ শক্তি কীভাবে বাড়ানো যায় সেই ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন একটি দেশ হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন।
বড় জনসমাগম এড়িয়ে চলুন : করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন যে নতুন বিপদের ঝুঁকি নিয়ে এসেছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি বড় জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যেহেতু ওমিক্রন নতুনভাবে একটা আবার সারা বিশ্বে দেখা দিচ্ছে, এখানে আমাদের দেশের মানুষকে একটু স্বাস্থ্য সুরক্ষাটা মেনে চলতে হবে। আর শীতকালে প্রাদুর্ভাবটা বাড়ে। এমনি সাধারণত আমাদের দেশে শীতকালে একটু সর্দি, কাশিও হয়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে সকলে মাস্কটা ব্যবহার করবেন।
প্রাপ্ত বয়স্কদের পাশাপাশি বর্তমানে দেশে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদেরও টিকা দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবুজ সংকেত পেলে এর চেয়ে কম বয়সীদেরও করোনার টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
মহামারীর মধ্যে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে প্রণোদনা দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য আমরা বিশেষ বরাদ্দ বাজেটে রেখেছি। প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আমাদের বাজেটে রাখা আছে। এর বাইরেও যদি প্রয়োজন হয় আমরা খরচ করতে পারব।
অনুষ্ঠানে দেশে টিকা মজুদের পরিসংখ্যান তুলে ধরার পাশপাশি টিকা নিয়ে নানা অপপ্রচারের প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি। ওমিক্রনে শিশুরা বেশি আক্রান্ত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সেইজন্য আমরা বাংলাদেশে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। তাছাড়া আমি সবাইকে অনুরোধ করব, আপনারা ভয় না পেয়ে টিকাটা নিয়ে নেন। টিকাটা নিলে অন্তত আপনার জীবনটা রক্ষা পাবে।
বাংলাদেশে এই টিকা যে সরকারি খরচে দেওয়া হচ্ছে, সে কথা মনে করিয়ে দেন তিনি। পৃথিবীর অনেক ধনী দেশও কিন্তু বিনা পয়সায় দেয় না। কিন্তু বাংলাদেশ দিচ্ছে, কারণ মানুষের সেবা করাটাই আমাদের বড় কাজ। এজন্য বাজেটে আলাদাভাবে আমরা টাকাও বরাদ্দ রেখে দিয়েছি এবং যত টাকাই লাগুক আমাদের এই কার্যক্রম আমরা অব্যাহত রাখব। সেটা আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৫ তলা ক্যান্সার ভবনে কী থাকবে
পরবর্তী নিবন্ধদুদিনে ৫০ ভাগের বেশি শিক্ষার্থীর আবেদন