চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালু এক নম্বর প্রায়োরিটি

চট্টগ্রাম-দোহাজারী প্রকল্পের অধীনে কেনা হবে ৩০টি ইঞ্জিন চট্টগ্রামে রেলের নতুন মহাপরিচালক

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ at ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামকক্সবাজার রুটে নিয়মিত ট্রেন চালুর বিষয়টি রেলওয়ের এক নম্বর প্রায়োরিটিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) সরদার সাহাদাত আলী। তিনি বলেছেন, আমরা নীতিগতভাবে একমত; চট্টগ্রামকক্সবাজার রুটে ট্রেন দিতে হবে। এখন একটি চলছে, হয়তো সেটি নিয়মিত চলবে, নয়তো অন্য একটি দেব। আগামীতে দুটি চলাচল করবে। এটা এক নম্বর প্রায়োরিটি। এই রুটে ট্রেন চালুর ডিমান্ডে আমাদের কোনো ‘না’ নেই।

গতকাল শনিবার দুপুরে নগরীর সিআরবিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম চট্টগ্রাম এসে সরদার সাহাদাত আলী বলেন, চট্টগ্রামকক্সবাজার রুটে ট্রেন চালুর দাবি বিবেচনায় নিয়েই টাইমটেবিলে দুটি ট্রেন রাখা হয়েছে। কিন্তু আমাদের নিজস্ব কিছু হিসাবনিকাশ আছে। দৈনিক কত যাত্রী যায়, আমরা কয়টা ট্রেন চালাতে পারিএসব। আমরা জানি এই রুটে ট্রেন চালু হলে মানুষের কষ্ট কম হবে। রেলওয়ের রাজস্ব আয়ও বাড়বে। সমস্যা হচ্ছে জনবল ও ইঞ্জিন সংকট।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামকক্সবাজার রুটে আমরা ট্রেন চালাতে পারব। কিন্তু সেক্ষেত্রে ঢাকাচট্টগ্রাম রুটের একটি কন্টেনারবাহী ট্রেন বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ হচ্ছে আমাদের এলএম নেই (ট্রেন চালক), ইঞ্জিন নেই। আমরা নিয়োগ দিচ্ছি, কিন্তু অনেকে চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে এখন আমরা এই সমস্যা সমাধানে প্যানেল সিস্টেম চালু করেছি। একজন চলে গেলে এই প্যানেল থেকে পরবর্তী আরেকজনকে নিয়োগ দিতে পারব। চুক্তিতেও পুরনো লোকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

পরিকল্পনা আর কাজের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, নানা কারণে সমন্বয়টা অনেক ক্ষেত্রে হয়নি। এর কারণ হচ্ছে, আমরা অবকাঠামো এবং রোলিং স্টক নিয়ে কাজ করি। দুটো কাজ যখন সমান্তরালভাবে হয় না, দুটোর মধ্যে যখন গ্যাপ থেকে যায়, তখন সমস্যা হয়। দেখা যায় আমার লাইনগুলো চালাতে পারছি না।

তবে এই সমস্যার জন্য রেলওয়ের কোনো দোষ নেই দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের প্রকল্পগুলো কিন্তু প্রায় বিদেশি দাতা গোষ্ঠীর ফান্ডিংয়ে হয়। দেখা গেল অবকাঠামোর ক্ষেত্রে ফান্ডিং পেলাম, কিন্তু রোলিং স্টকে পেলাম না। তখন সমস্যাটা হয়। তবে আমরা কাজ করছি। রানিং প্রজেক্টগুলো শেষ হলে এই সমস্যা আর থাকবে না।

রেলওয়ের ডিজি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী নতুন রেলপথ প্রকল্পের অধীনে ৩০টি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ক্রয় করা হবে। এই প্রকল্পটি দ্রুত এগুচ্ছে। অন্যান্য প্রকল্পের অধীনেও ইঞ্জিন ক্রয় করা হবে।

পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে ট্রেন যোগাযোগ চালু হলেও কক্সবাজার স্টেশন দিয়ে মাদক পাচার রোধে এখনো পর্যন্ত লাগেজ স্ক্যানার বসানো না হওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ইয়াবাসহ সকল ধরনের মাদক পাচার রোধ আমাদের কর্মকর্তারা সচেতন আছেন। মাদক পাচার রোধে কক্সবাজার স্টেশনে স্ক্যানার বসানোর প্রস্তুতি রয়েছে। শুধু মাদক পাচারকারী নয়, আমাদের যারা নিম্ন শ্রেণির কর্মচারী আছেন, তারাও যাতে এই ধরনের কাজে জড়িত হতে না পারেন, সেই ব্যাপারে আমাদের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আরএনবি, জিআরপি পুলিশ কাজ করছে। আমরা খুব সতর্ক আছি।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. শহিদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরীসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রাথমিকে শ্রেণি কার্যক্রম বিষয়ে নতুন নির্দেশনা, বন্ধ থাকবে প্রাক-প্রাথমিক
পরবর্তী নিবন্ধকালুরঘাট সেতু নির্মাণে ঋণ চুক্তি জুনে