১০ জন নিয়ে ভারতকে রুখে দিল বাংলাদেশ জামালদের সামনে ফাইনালের হাতছানি

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ৫ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:১৪ পূর্বাহ্ণ

দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবলে ভারতকে হারানো যাচ্ছে না প্রায় দেড় যুগেরও বেশি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতকে আর চেপে বসতে দিচ্ছে না বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে কলকাতার সল্টলেকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ম্যাচে ভারতকে রুখে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে আরো একবার রুখে দিল ভারতকে। তবে এবারের ড্র টা যেন জয়েরও সমান। কারণ প্রায় এক অর্ধ দশ জন নিয়ে খেলে সমতা সূচক গোল করার পাশাপাশি এক পয়েন্ট কেড়ে নিয়েছে ভারতের কাছ থেকে। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচেও অপরাজিত থাকল। গতকাল সোমবার ভারতের ১-১ গোলে ড্র করার ফলে দুই ম্যাচে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট। পরের দুই ম্যাচের একটিতে জিতলে ২০০৫ সালের পর আবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে জায়গা করে নেবে বাংলাদেশ। পরের দুই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ যথাক্রমে নেপাল এবং স্বাগতিক মালদ্বীপ। নতুন কোচ অস্কার ব্রুজনের অধীনে বেশ ভালই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ সূচনা অন্তত তার প্রমাণ।
মালদ্বীপের রাজধানী মালের রাশমি ধান্দু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে শুরুটা সতর্কতার সাথে করে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের আক্রমণ সামলে পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে জামাল ভূইয়ারা। ষষ্ঠ মিনিটে জামাল ভূইয়ার পাসে ইয়াসিন আরাফাতের শট থাকেনি লক্ষ্যে। তিন মিনিট পর মতিনের ক্রস ক্লিয়ার করেন ভারতের রাহুল ভেকে। ১১ মিনিটে ইব্রাহিমের ক্রসে শট নিতে পারেননি মতিন। ২১তম মিনিটে জামালের কর্নার ফেরান গোলরক্ষক গুরপ্রিত সিং। কয় মিনিটে বেশ কয়েকটি আক্রমণ রচনা করলেও খেলার ২৬ মিনিটে গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ। ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা উদান্তা সিং বল বাড়িয়েছিলেন সুনিল ছেত্রির উদ্দেশ্যে। প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান ভারতের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছেত্রি। পরের মিনিটেই সমতায় ফেরার সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। পাল্টা আক্রমণে ওঠা মতিনের বাড়ানো বল ধরে শট নিয়েছিলেন বিপলু আহমেদ। কিন্তু বল বেরিয়ে যায় সাইডবার ঘেষে। ৩৫ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে মতিনের থ্রুু পাস ধরে সাদউদ্দিন বল বাড়ান বিপুলের উদ্দেশে। তার কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষা করেন ভারতের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক গুরপ্রিত।
দ্বিতীয়ার্ধেও বাংলাদেশ চেষ্টা করে আক্রমণে যাওয়ার। কিন্তু সুযোগ সৃষ্টি করতে পারছিল না। উল্টো খেলার ৫২ মিনিটে দশজনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। ভারতের কোলাকোকে পেছন থেকে টেনে ফেলে দিলে লাল কার্ড দেখেন বিশ্বনাথ ঘোষ। সে সুযোগে খেলার ৬১ মিনিটে পরপর দুটি আক্রমণ করে ভারত। মানভির সিংয়ে শট ফেরানোর পর উদান্তার শটও ফেরান বাংলাদেশের গোলরক্ষক। ৭৪ মিনিটে সমতা ফেরায় বাংলাদেশ। বাঁ দিক থেকে নেওয়া জামালের কর্নারে লাফিয়ে ওঠা রাকিবের মাথা ছুঁয়ে বল চলে যায় ইয়াছিনের কাছে। সুযোগ সন্ধানী ইয়াসিন ডাইভিং হেডে বল পাঠান জালে। উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ শিবির। সমতা ফেরানোর পর নিজেদের রক্ষণকে দৃঢ় করার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। আর তাতে সফলও হয়েছে অস্কার ব্রুজনের দল। তবে নিজেদের রক্ষণ সামলে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। যদিও তাতে সফল হয়নি। তবে রক্ষণ সামলাতে সফল হয়েছে বাংলাদেশ দল। আর তাতে র‌্যাঙ্কিংয়ে ৭২ ধাপ এগিয়ে থাকা ভারতের কাছ থেকে মহামূল্যবান ১ পয়েন্ট পাওয়ার উৎসবে মাতে বাংলাদেশ। আগামী বৃহস্পতিবার স্বাগতিক মালদ্বীপের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে জিতলেই ফাইনালে ওঠা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাছ আনতে গিয়ে লাশ দুই ভাই
পরবর্তী নিবন্ধচসিকের দুই প্রকৌশলীর ‘নিয়মবহির্ভূত’ পদোন্নতি