সিএনজি দাঁড়ানো নিয়ে তুলকালাম

আনসার ও সিএনজি চালকদের মারামারি আহত তিন, একজনকে হাসপাতালে ভর্তি

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২২ মে, ২০২২ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ভবনের সামনে (গোল চত্বরে) সিএনজি টেক্সি দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। গতকাল শনিবার দুপুরে সেখানে দায়িত্বরত আনসার সদস্য ও সিএনজি চালকদের মাঝে এ ঘটনা ঘটে। এতে ফজলুর রহমান, মিন্টু ও মাইনউদ্দিন নামে তিনজন চালক আহত হয়েছেন বলে দাবি সিএনজি চালকদের। আহতদের মাঝে ফজলুর রহমানকে হাসপাতালের ২৮ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথায় জখম হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান আজাদীকে বলেন, হাসপাতালের মূল ভবনে উঠার পথে (গোল চত্বরে) রিকশা ও সিএনজিসহ বিভিন্ন বাহন দাঁড়িয়ে থাকে। এ কারণে সেখানে জট লেগে যায়। প্রবেশ মুখটি জট মুক্ত রাখতেই আনসার সদস্যদের সেখানে নিয়োজিত করা হয়েছে। তারা এসব নিয়ন্ত্রণ করেন। সেখান থেকে রিকশা-সিএনজি সরিয়ে দেন। তাদের দায়িত্বই এটি। কিন্তু শনিবার দুপুরে সেখানে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে দায়িত্বরত আনসার ও সিএনজি টেক্সি চালকদের মাঝে গন্ডগোল হয়েছে। পরে উভয় পক্ষ আপস-মীমাংসা হয়ে গেছে।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজিম উদ্দিন জানান, ঘটনার পর দুই পক্ষই থানায় এসেছিলেন। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও দেখা হয়েছে। উভয় পক্ষের ভুল বুঝাবুঝিতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে তারা একমত হয়ে আপসে সম্মত হয়। পরে এটি মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। আহত একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলেও জানান ওসি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি সিএনজি টেক্সি যাত্রী নিয়ে এসে গোল চত্বরে দাঁড়ায়। যাত্রী নামিয়ে দেয়ার পর সিএনজিটিকে সরে যেতে বলে সেখানে দায়িত্বরত এক আনসার সদস্য। এরপরও চালক সেখান থেকে না সরলে আনসার সদস্য লাঠি দিয়ে সিএনজিতে আঘাত করেন। এ নিয়ে আনসার সদস্য ও সিএনজি চালকের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হাতে থাকা লাঠি দিয়ে সিএনজি চালককে আঘাত করেন ওই আনসার সদস্য।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সিএনজি চালক ফোন করে আরো ১০/১২ জন চালককে জড়ো করেন। তারা ওই আনসার সদস্যকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালান। এ সময় আরো বেশ কয়জন আনসার সদস্য ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মাঝে তুলকালাম লেগে যায়। এতে ফজলুর রহমানের মাথা ফেটে যায়। আরো দুজন হাতে আঘাত পান। আহত তিনজনই সিএনজি চালক। পরে পুলিশ ও হাসপাতাল প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশের উপস্থিতিতে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়। এ ঘটনায় দুই পক্ষই পাঁচলাইশ থানায় হাজির হয়ে মামলা করতে উদ্যোগী হয়।

তবে এ ঘটনায় দুই পক্ষেরই ভুল আছে বলে উভয় পক্ষ স্বীকার করে। দুই পক্ষের লোকজন সমঝোতায় সম্মতি দিলে ঘটনাটির আপস-মীমাংসা হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন পাঁচলাইশ থানার ওসি মো. নাজিম উদ্দিন। যদিও আপস-মীমাংসায় আনসারের পক্ষ থেকে আহত সিএনজি চালকদের চিকিৎসা খরচ বহনের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার কমান্ডার মো. সেলিম আজাদীকে বলেন, গোল চত্বরে সিএনজি দাঁড়ানো নিয়ে একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে দুই পক্ষ মিলে সমঝোতা হয়ে গেছে। একই কথা বলেছেন বাংলাদেশ অটোরিকশা-অটো টেম্পু শ্রমিক ফেডারেশনের উপদেষ্টা সিদ্দিক মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি। তারা বলেন, দুই পক্ষের ভুল বুঝাবুঝিতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা সবাই একমত হয়েছি। এর প্রেক্ষিতে সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা হয়ে গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলায়ন্স জেলার নতুন গভর্নর শেখ সামশুদ্দিন
পরবর্তী নিবন্ধসাগরিকায় পুলিশ ভ্যানে বাসের ধাক্কা, ১৩ সদস্য আহত