সাফ-ফুটবল জয়ী একেক জন নারী বাংলাদেশের এক একটা মাইলস্টোন

কাজী জাহাঙ্গীর | বুধবার , ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের মেয়েরা এভাবে ভারত, নেপালকে উড়িয়ে দিয়ে আচমকা সাফ নারী ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল বিষয়টা ভাবতেই শিহরিত না হয়ে পারা যায় না। রীতিমত চমকে উঠার মতো ঘটনাটা ঘটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের এই নারীদল। ফাইনালের আগে ফেসবুকে দেওয়া সেই স্ট্যাটাস পড়ে আমিও সেদিন আবেগআপ্লুত হয়েছিলাম, ভেবেছিলাম আহারে মেয়েটার কী যে আকুতি- ‘ছাদখোলা চ্যাম্পিয়নস বাসে না দাঁড়ালেও চলবে, যারা আমাদের স্বপ্নকে আলিঙ্গন করতে উৎসুক হয়ে আছেন সেই সব স্বপ্নসারথিদের জন্য এটা জিততে চাই, সমাজের টিপ্পনিকে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছেন তাদের জন্য এটি জিততে চাই, নিরঙ্কুশ সমর্থনকারীদের আমরা প্রতিদান দিতে চাই। আমরা জীবনযুদ্ধেই লড়ে অভ্যস্ত, দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়ে যাব’ লেখাগুলো পড়ে ঠিকই বুঝতে কষ্ট হয় না যে, এগুলো কোনো একজনের কথা নয়। পুরোদলের খেলোয়াড়দের অন্তরে লুকিয়ে থাকা দুঃখ, বেদনা, আকাঙ্ক্ষা হতাশার বাক্যগুলো খুবই গোছালো ভাবেই মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তার হয়ে পুরো নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছিল। তার এক স্ট্যাটাসের ঘূর্ণিতে আমরা দেখলাম কিভাবে দুদিনের মধ্যে সত্যি সত্যি ছাদ খোলা বাস তৈরি হয়ে গিয়েছিল। পুরো দলের অধিকাংশ খেলোয়াড়দের শিকড়ের খোঁজ নিয়ে যদি আমরা দেখি তাহলে হতবাক হওয়া ছাড়া আর কিছু বলার থাকবে না। গোটা দেশের মানুষ এই জয়ের পর জানতে পারলো কিভাবে পাহাড় সমতলের প্রত্যন্ত খুবই প্রান্তিক এলাকা থেকে কত সংগ্রাম করে উঠে এসে বাংলাদেশের জন্য এত বড় একটা মাইলস্টোন স্থাপন করে দিয়ে গেল তারা। দারিদ্র্য, সামাজিক বৈষম্য, কুসংস্কার এসব প্রতিকূলতাকে অগ্রাহ্য করে এক অদম্য সাহসে উঠে আসা খেলোয়াড়রূপী যোদ্ধারা- সাবিনা, স্বপ্না, মারিয়া, রূপনা, আনুচিং, আনাই, মনিকা সানজিদা সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিবাদন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলুই পাস্তুর : জলাতঙ্কের টিকা আবিষ্কারক
পরবর্তী নিবন্ধনারী ফুটবল দলের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক