সরকারের উদযাপন জনগণকে বাদ দিয়ে : ফখরুল

মোদির সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন

| বুধবার , ২৪ মার্চ, ২০২১ at ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ

সরকার জনগণকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলকে দেখার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, সরকার সুবর্ণজয়ন্তীটা পালন করছে জনগণকে বাদ দিয়ে। জনগণ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই সুবর্ণজয়ন্তীর যে অনুষ্ঠানগুলো তারা করছে, এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো অবস্থান নেই। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোরও কোনো অবস্থান নেই। শুধু বিদেশি মেহমানদের নিয়ে এসে এখানে দেখানো হচ্ছে, বলানো হচ্ছে যে, আপনার উন্নয়নের লহরী বয়ে যাচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল ও ভুটানের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের আগমনকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা সবসময় বলে এসেছি যে, আমরা সমসময়ই আমাদের দেশে বিদেশি বন্ধুদের স্বাগত জানাই এবং সুবর্ণজয়ন্তীতে অবশ্যই আমরা তাদের স্বাগত জানাব।
এ উপলক্ষে বিএনপিও বছরব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সেই কর্মসূচিগুলো পালন করছি। কিন্তু দুভার্গ্যক্রমে গত ১৭ তারিখ থেকে এই সুবর্ণজয়ন্তী ও বর্ষ পালন করার কারণ দেখিয়ে এবং বিদেশি মেহমানরা আসবেন, সেই কারণ দেখিয়ে আমাদের কর্মসূচিগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষের চলাচলে বাধার সৃষ্টি করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর হয়েছে। দুর্ভাগ্যক্রমে ৫০ বছর বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক যে অধিকার তা হারিয়ে ফেলেছি, আমরা আমাদের মানুষের অধিকারগুলো হারিয়ে ফেলেছি। এখানে যে পরিস্থিতিতে সরকার দেশ পরিচালনা করছেন, তা কোনোমতেই গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক নয়।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরো উন্নত করতে হলে আগে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সুরাহা করার দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব। ‘ভারতের যে অভিন্ন নদীগুলো রয়েছে তার হিস্যার মীমাংসা হওয়া উচিত, সীমান্তে হত্যা বন্ধ হওয়া উচিত। কানেকটিভিটিতে আমার কী লাভ হচ্ছে সেটা জনগণের কাছে স্পষ্ট হওয়া উচিত। এই কথাগুলো আমরা বরাবরই বলে আসছি।’
দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় হাসপাতালে শয্যা মিলছে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল সরকারের উদ্দেশে বলেন, এতদিন ধরে কী করলেন? বেড নাই কেন? কখন থেকে আমরা বলছিলাম। সেই বেড তো তারা যোগাড় করতে পারেননি। চিকিৎসা ঠিকমত দিতে পারেন না। জনগণের সমস্যা বাড়ছে, করোনা মারাত্মক হারে বেড়ে গেছে।
সরকারকে অন্যসব বাদ দিয়ে মহামারী নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে ফখরুল বলেন, তাদের নিয়তেরই ঠিক নাই। তাদের তো লক্ষ্য একটাই, কখন কোত্থেকে তারা চুরি করবে। মানে কথা বলছি একেবারে সরাসরি। প্রত্যেকটা বিষয়ে যখন দুর্নীতি করতে চায়, তখন তো সমাধান করা সম্ভব না।
আমরা প্রথমেই বলেছিলাম যে, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকে, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও এনজিও তাদেরকে ডেকে একটা রোড ম্যাপ তৈরি করা। ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক কথা আসছে। যারা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তারা প্রত্যেকেই প্রথম ডোজ নিয়েছেন। এগুলোর তো সমাধান বলতে হবে তাদেরকে।
এদিন দুপুরে হাবিব উন নবী খান সোহেলকে দেখতে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন বিএনপি মহাসচিব। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দলীয় কর্মসূচির সময় পুলিশের হামলায় আহত হন সোহেল। তার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেন ফখরুল। ঢাকা মহানগার দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউৎপাদন করেও সুখ নেই সীতাকুণ্ডের ২৪ হাজার কৃষকের
পরবর্তী নিবন্ধসাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী