শান্তির নোবেল দুই সাংবাদিকের

আজাদী অনলাইন | শুক্রবার , ৮ অক্টোবর, ২০২১ at ৬:৫৭ অপরাহ্ণ

এ বছর শান্তিতে নোবেল পেলেন ফিলিপাইন ও রাশিয়ার দুই সাংবাদিক।

কর্তৃত্ববাদী শাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে শাসকের রোষের মুখে পড়েন তারা। এ দুই সাংবাদিক হলেন ফিলিপাইনের মারিয়া রেসা এবং রাশিয়ার দিমিত্রি মুরাতভ।

নরওয়ের নোবেল ইন্সটিটিউট আজ শুক্রবার (৮ অক্টোবর) নরওয়ের রাজধানী অসলোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ১০২তম নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করে। বিডিনিউজ

নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেন বলেন, “গণতন্ত্র আর টেকসই শান্তির অন্যতম পূর্বশর্ত মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে লড়াইয়ে ‘সাহসী’ ভূমিকার জন্য এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে তাদের। বিশ্বে গণতন্ত্র আর সংবাদপত্রের স্বাধীনতা যখন ক্রমেই হুমকির মুখে পড়ছে; তার বিপরীতে দাঁড়িয়ে যারা এই আদর্শের জন্য লড়াই করে চলেছেন, সেই সকল সাংবাদিকের প্রতিনিধিত্ব করছেন মারিয়া রেসা ও দিমিত্রি মুরাতভ।”

১৯৩৫ সালে জার্মান সাংবাদিক কার্ল ফন ওজিয়েতস্কির পর এই প্রথম কোনো সাংবাদিককে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য বেছে নিল নরওয়ের নোবেল কমিটি।

বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেন বলেন, “মুক্ত, স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা হলো ক্ষমতার অপব্যবহার, মিথা আর অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ।”

নোবেল পুরস্কারের এক কোটি সুইডিশ ক্রোনা সমান ভাগে ভাগ করে নেবেন রেসা আর মুরাতভ।

চলতি বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ৩২৯ জন ব্যক্তি আর প্রতিষ্ঠানের মনোনয়ন পেয়েছিল নোবেল কমিটি। এবারের পুরস্কারের জন্য যাদের নাম এসেছিল তাদের মধ্যে পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, অধিকার সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নামও ছিল।

নোবেল কমিটি বলেছে, এবারের পুরস্কারজয়ী মারিয়া রেসা মত প্রকাশের স্বাধীনতার শক্তিকে ব্যবহার করেছেন তার দেশ ফিলিপাইনে ক্ষমতার অপব্যবহার, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং কর্তৃত্ববাদী সরকারের মুখোশ উন্মোচনে।

২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত ফিলিপাইনের ডিজিটাল মিডিয়া কোম্পানি র‌্যাপলারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রেসা এখনও এই অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

নোবেল কমিটি বলেছে, “একজন সাংবাদিক এবং র‌্যাপলারের সিইও হিসেবে রেসা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষের একজন নির্ভীক যোদ্ধা হিসেবে।”

প্রেসিডেন্ট রদরিগো দুতার্তের শাসনামলে ফিলিপাইনের বিতর্কিত মাদকবিরোধী অভিযানের হত্যার ঘটনাগুলো তুলে ধরতে সাহসী ভূমিকা নেয় র‌্যাপলার।

নোবেল কমিটি বলেছে, “নিহতের সংখ্যা এত বেশি ছিল যে ওই মাদকবিরোধী অভিযান নিজের দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধের রূপ পেয়েছিল। তাছাড়া ভুয়া খবর ছড়াতে, সরকারবিরোধীদের নাজেহাল করতে, মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে কীভাবে সেখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করা হয়েছে তাও তুলে ধরেছেন রেসা এবং র‌্যাপলার।”

এক সাক্ষাৎকারে ৫৮ বছর বয়সী রেসা বলেছিলেন, “সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে নামা হলো পাগলামি। আমি সেটা করতে চাইনি কিন্তু আমার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সেটাই আমাকে করতে হয়েছে।”

গত বছর ফিলিপাইনে এক মামলায় মারিয়া রেসাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। ওই মামলাকে ফিলিপাইনের সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে দেখেন অনেকে।

প্রথম ফিলিপিনো হিসেবে শান্তিতে নোবেল জয়ের পর র‌্যাপলারের সরাসরি সম্প্রচারে এসে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মারিয়া রেসা বলেন, তিনি ‘অভিভূত’।

তিনি বলেন, “এটা দেখালো, বস্তুনিষ্ঠতা ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব না। যেখানে বস্তুনিষ্ঠতা নেই সেখানে সত্য এবং বিশ্বাসও নেই।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধচিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির অটাম সেমিস্টারের অ্যাডমিশন উইক শুরু ১০ অক্টোবর
পরবর্তী নিবন্ধহাটহাজারীর সেই অফিস সহকারী বদলি