ভাইরাস দিয়ে ক্যান্সার চিকিৎসায় বড় সাফল্য

| বুধবার , ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ

ক্যান্সার চিকিৎসার নতুন এক গবেষণায় খুব সাধারণ একটি ভাইরাসের ব্যবহারে বড় ধরনের সাফল্য পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন এই ভাইরাস শরীরের ক্ষতিকর কোষকে আক্রমণ করে তাকে ধ্বংস করে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এই চিকিৎসায় একজন ক্যান্সার থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠেছে, এবং অন্যদের টিউমার সঙ্কুচিত বা ছোট হয়ে গেছে। এই গবেষণায় যে ভাইরাসটি ক্যান্সারের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে তার নাম হারপেস সিম্প্লেঙ। তবে ভাইরাসটি শরীরে প্রয়োগ করার আগে তাতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা বলছেন, গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল বেশ আশাব্যঞ্জক। তবে এ বিষয়ে আরো বড় পরিসরে এবং দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণার প্রয়োজন। তারা আশা করছেন এই চিকিৎসার মাধ্যমে যাদের দেহে ইতোমধ্যেই ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে (অ্যাডভান্সড স্টেজ) অথবা যারা জটিল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন, রোগ নিরাময়ের মাধ্যমে তাদের জীবন রক্ষা করা সম্ভব। ভাইরাস দিয়ে শুধু ভ্যাকসিন তৈরি করা হয় তা না। বর্তমানে ভাইরাল থেরাপির মাধ্যমে ভাইরাস দিয়ে ক্যান্সারেরও চিকিৎসা করা হচ্ছে। এই গবেষণায় একটি ইনজেকশনের মাধ্যমে রূপান্তরিত হারপেস ভাইরাসটি সরাসরি টিউমারের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পর এটি দুটো কাজ করেছে।
দেখা গেছে প্রথমত ভাইরাসটি ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষের ভেতরে ঢুকে সেখানে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। এবং দ্বিতীয়ত এটি রোগীর দেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে আরো বেশি শক্তিশালী করে তোলে। প্রায় ৪০ জন রোগীর দেহে এই ভাইরাল থেরাপির পরীক্ষা চালানো হয়েছে। কোনো কোনো রোগীকে শুধু ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। অন্যদেরকে ইনজেকশনের পাশাপাশি ক্যান্সারের অন্যান্য ওষুধও দেওয়া হয়েছে। গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, নয় জন রোগীর মধ্যে তিনজনকে শুধু আর পি টু ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে, যাদের টিউমার ছোট হয়ে গেছে; ত্রিশ জনের মধ্যে সাতজনকে ইনজেকশনের পাশাপাশি অন্যান্য চিকিৎসাও দেওয়া হয়েছে। তাদের অবস্থারও উন্নতি হয়েছে; পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল খুব কম। এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন অধ্যাপক কেভিন হ্যারিংটন। তিনি বলেন, অন্ননালী এবং চোখের ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের চিকিৎসায় এই থেরাপি বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছে।
ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে ড. মেরিন বেকার বলেন, ভাইরাস দিয়ে যে ক্যান্সারের চিকিৎসা করা যায় বিজ্ঞানীরা সেটা ১০০ বছর আগেই আবিষ্কার করেছেন। তবে এই চিকিৎসার নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার ব্যাপারে তেমন একটা নিশ্চয়তা ছিল না। তবে বিজ্ঞানীরা বলছে আর পি টু চিকিৎসায় যে সাফল্য পাওয়া গেছে তা ক্যান্সারের চিকিৎসায় নতুন এক সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসফলভাবে গ্রহাণুতে আঘাত হেনেছে নাসার ‘ডার্ট’
পরবর্তী নিবন্ধসিকি শতাব্দীতে প্রথম অ-গান্ধী সভাপতি পেতে যাচ্ছে কংগ্রেস