বড় যদি হতে চাও

সুলতানা কাজী | বুধবার , ৭ জুন, ২০২৩ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

খুব ছোটবেলায় কোন ক্লাসে ঠিক মনে পড়ছেনা ‘বড় কে’ কবিতাটা পড়েছিলাম। কবি পশ্বর গুপ্তের লেখা। কবিতাটার একটা মজার চরণ হলো–‘বড় যদি হতে চাও, ছোট হও তবে।’ আক্ষরিক অর্থে চরণটার পরমার্থ উদ্ধার করা কঠিন! কবি বুঝাতে চেয়েছেন, বিনম্রতার সাথে কাজ করলে বড় হওয়া সম্ভব। বড় হওয়ার জন্য কেমন মানসিকতার প্রয়োজন, সেটাই আসলে কবি স্পষ্ট করতে চেয়েছিলেন কবিতাটাতে। অতীব জরুরি কথা হলো, নিজেকে ছোট ভাববার মধ্যে একটা মহত্ব লুকিয়ে থাকে। সময় বড় অদ্ভুত! সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সময়কে অতিক্রম করার মহৎ ইচ্ছা, যাকে বলে সদিচ্ছা, সেটা থাকা খুব দরকার।

পৃথিবীখ্যাত যত মহামানব আছেন সবাই নিজেকে অতি সাধারণই ভাবেন! বিশ্বজোড়া পাঠশালা এখন। পশান থেকে নৈঋতে যাইই ঘটে, মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময়। কী এক নশ্বর সময়! প্রতিনিয়ত শেখার, জানার, গড়ার অবারিত ক্ষেত্র। কোনটাকে বর্জন করবো, কোনটাকে ধারণ করবো তা নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষে। কিন্ত একটা ব্যাপারে সবারই একমত হওয়া উচিত যে, কাউকে কটাক্ষ করে, নিগ্রহ করে আর যাই হোক, বড় হওয়া যায়না!

বড় হতে হলে প্রয়োজন শ্রদ্ধা, ভালোবাসার সমন্বয়ে নিজেকে গড়ে তোলা। ভুলকে ভুল স্বীকার করা, অন্যায়কে অন্যায় বলার সাহস সঞ্চার করার মধ্যেই বড় হওয়ার মন্ত্র লুকিয়ে আছে। ছোটকে সস্নেহে কাছে টানার অসীম বোধ যার আছে সেই বড়। ছোটরা ভুল করলে ক্ষমা যেমন করতে হয়, শাসনের বাণীও রপ্ত করতে জানতে হয়। কথায় আছে, ‘ফলনং পরিচায়েত।’ অর্থাৎ কর্মফলই আসল পরিচয়। কাজের স্পৃহা এবং সৎকর্মই পারে একজন মানুষকে বড় করতে। দাম্ভিকতা কিংবা অহংকার মানুষকে ডাস্টবিনে যাওয়ার পথ রচনা করে দেয়। জীবনে সবাই বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখে। সফলতার ছোঁয়া পেতে সবাই উদগ্রীব। ছোট হয়ে বড় হওয়ার স্বপ্ন রোপণ হোক সবার অন্তরে। মনের মলীনতা পরিহার করে সবাইকে নিজের আপন মনে করার মানসিকতা জাগ্রত হোক। মানুষকে ভালোবাসবো, মানুষকে ক্ষমা করবো, মানুষকে শাসন করবো ছোটদের তুচ্ছ করবোনা কখনো। সর্বোপরি মানুষই হবো। বড় হয়েও ছোটই হবো! ভাবনাগুলো প্রশান্তি পাক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআর নয় বসে থাকা
পরবর্তী নিবন্ধদূরের টানে বাহির পানে