বৈশ্বিক সন্ত্রাস মোকাবেলায় ভূমিকা রাখছে পুলিশ

নগরে দুই ইউনিটের মহড়া দেখলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১ মার্চ, ২০২১ at ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ

বৈশ্বিক সন্ত্রাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বলেছেন, বাংলাদেশের পুলিশ নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। আমিও একসময় পুলিশে ছিলাম। পুলিশ মানুষের জীবন বাঁচায়।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের প্রশিক্ষণের মধ্যেই আপনারা মানবাধিকারের বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকেন। নাগরিকদের যে অধিকার সেটা যে আপনারা খেয়াল করেন এবং মানেন, তাতে আমি খুব খুশি। গ্লোবাল টেরোরিজম মোকাবেলায় আপনারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন, সেজন্য ধন্যবাদ।
জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাস ও চোরাচালান প্রতিরোধে গঠিত চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ক্রাইসিস রেসপন্স টিম (সিআরটি) ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের (বিডিইউ) সদস্যদের যৌথ মহড়া পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল রোববার বিকাল ৩টার দিকে নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের এসএএফ মাঠে অনুষ্ঠিত মহড়া পরিদর্শন করেন। সিএমপি কমিশনার সালেহ্‌ মোহাম্মদ তানভীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় অবস্থিত আমেরিকান রিজিওনাল সিকিউরিটি অফিসার প্রিস্টিনা উইলিয়ামস ও সিনিয়র কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অ্যাডভাইজার ক্রিস্টোফার উইনগার্ড। যৌথ মহড়ায় সোয়াত ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের সদস্যরা সশস্ত্র জঙ্গিদের কাছ থেকে জিম্মি নাগরিকদের উদ্ধারের দৃশ্য তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত, জঙ্গি হামলাসহ যেকোনো ধরনের সন্ত্রাস মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এন্টি টেরোরিজম অ্যাসিসটেন্স (এটিএ) প্রোগ্রামের আওতায় মাসব্যাপী এ প্রশিক্ষণ চলছে। প্রশিক্ষণ নিচ্ছে সিএমপির ক্রাইসিস রেসপন্স টিম বা সোয়াত ও বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট। যৌথ মহড়ায় দুই টিমের ৩৮ সদস্য অংশ নেন।
সিএমপি কমিশনার সালেহ্‌ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, আগামীতেও এ ধরনের প্রশিক্ষণ অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আমেরিকার রাষ্ট্রদূত। পাশাপাশি এ ধরনের ট্রেনিং আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায় কিনা সেটিও তিনি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনীতে স্পেশালাইজড ইউনিট সময়ের দাবি। বর্তমান সরকারের আমলে মহানগরগুলোতে এ ধরনের টিম গঠন হয়ে গেছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য যে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন সেগুলো হচ্ছে। এ টিমের সাথে ডগ স্কোয়াডও যুক্ত হবে। তখন এটি আরও উন্নত হবে।
তিনি আরও বলেন, সিএমপিতে সাইবার ফরেনসিক ল্যাব তৈরি হচ্ছে। জঙ্গিবাদ দমনের পাশাপাশি সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণেও নগর পুলিশের সক্ষমতা বাড়বে। চট্টগ্রামে চলমান এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে আমেরিকার সোয়াত, নেভি সিল কমান্ডার ও আমেরিকান আর্মির সাবেক কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
প্রশিক্ষণার্থীদের অন্যতম কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করা সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার আসিফ মহিউদ্দীন আজাদীকে জানান, সোয়াত ও বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিটের সদস্যদের মাসব্যাপী সিআরটি ম্যানটরশিপ ও বিডিইউ ম্যানটরশিপ প্রশিক্ষণ চলছে। এতে সিএমপির সোয়াত টিমের ২৫ জন এবং বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের ১৩ জন সদস্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এর আগে জর্ডানে এ ধরনের প্রশিক্ষণ হয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর এ কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও আবার তা চালু হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএসসি ইন হেলথ টেকনোলজি কোর্স চালু করছে চসিক
পরবর্তী নিবন্ধ১৩ ঘন্টার ব্যবধানে প্রাণ হারালেন শিক্ষক ও ছাত্রী