বন্ধ হয়ে গেল শেষ ডেমু ট্রেনটিও

৪৭ কিমি রেল লাইন জুড়ে ১২ স্টেশন, আছেন স্টেশন মাস্টারসহ কর্মচারী, কিন্তু চলে না কোনো লোকাল ট্রেন

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটের ৪৭ কিলোমিটার রেল লাইন জুড়ে ১২টি স্টেশন। স্টেশনগুলোতে দায়িত্বে আছেন মাস্টারসহ অন্যান্য কর্মচারীরাও। কিন্তু রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ রুটগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই রুটে এখন আর কোনো ট্রেন চলে না। ইঞ্জিন সংকটে এই রুটে গত ১৮ মাস আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ২ জোড়া যাত্রীবাহী লোকাল ট্রেন। একটি মাত্র ডেমু ট্রেন চলাচল করত সন্ধ্যা ৭টায়। অবশেষে সেটিও বন্ধ হয়ে গেল ইঞ্জিন সংকটের কারণে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এ অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার যাত্রী। এক বছর আগেও ভোরের ট্রেন ধরে এ অঞ্চলের শত শত মানুষ নিরাপদে শহরে যাতায়াত করতেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে দোহাজারী রুটে ডেমু ট্রেনটি চলছে না বলে জানিয়েছেন এই রুটের পূর্ব গোমদন্ডী রেলওয়ের স্টেশনে কর্মরত কর্মচারী সোনা মিয়া। তিনি জানান, চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে ডেমু ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে ৪ দিন ধরে। প্রকৌশলী না থাকায় ট্রেনটির ত্রুটি সারানো যায়নি। এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান আজাদীকে জানান, ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ডেমু ট্রেনটি বন্ধ রয়েছে। নষ্ট ইঞ্জিনটি মেরামতের ব্যাপারে মেকানিক্যাল বিভাগ দেখছে। চট্টগ্রাম-দোহাজারী থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ১২টি স্টেশনের অন্তত ১০ হাজার যাত্রী রেল সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। গত ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে গত ১৮ মাস ধরে এই রুটের দুই জোড়া লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। করোনা পরবর্তী সারাদেশে পর্যায়ক্রমে সকল আন্তঃনগর ও মেইল ট্রেন চলাচল শুরু হলেও চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটের ২ জোড়া লোকাল ট্রেন চলাচল আর শুরু হয়নি ইঞ্জিন সংকটের কারণে। এখনো বন্ধ রয়েছে। তবে একটি ডেমু ট্রেন চলাচল করলেও শেষ পর্যন্ত সেটিও বন্ধ হয়ে গেছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটের মধ্যে স্টেশন রয়েছে ১২টি। স্টেশনগুলো হলো-ঝাউতলা, ষোলশহর, জান আলী হাট, গোমদণ্ডী, বেঙ্গুরা, ধলঘাট, পটিয়া, চক্রশালা, খরনা, কাঞ্চননগর, খানহাট ও হাশিমপুর। এসকল স্টেশন থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ হাজার যাত্রী ট্রেনে করে যাওয়া-আসা করতো। বর্তমানে লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় এসব মানুষ রেল সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। শুধু দোহাজারী স্টেশন থেকেই প্রতিদিন ৩শ থেকে ৪শ জন যাত্রী যাওয়া আসা করতো।

দীর্ঘ এক বছরের বেশি এই রুটের লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দোহাজারীর এলাকার চাকরিজীবী আমির হোসেন আজাদীকে জানান, লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় এখন প্রায় সময় বাসে করে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করতে হয়। আমরা সর্বনিম্ন ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৪ টাকা ভাড়ায় অনায়াসে যাতায়াত সুবিধা পেতাম।
কাঞ্চননগর এলাকার সবজি ব্যবসায়ী মো. জয়নাল আবেদীন জুয়েল জানান, ট্রেন যখন চালু ছিল, তখন প্রচুর শাকসবজি দোহাজারী লোকাল ট্রেন দিয়ে কম খরচে চট্টগ্রাম শহর থেকে আড়তদার এসে নিয়ে যেত। গাড়ি দিয়ে নিতে গেলে খরচ অনেক বেশি লাগে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিভিল সার্জন কার্যালয়ে ডেঙ্গু সংক্রান্ত কন্ট্রোল রুম চালু
পরবর্তী নিবন্ধচেক প্রতারণার মামলায় আসলাম চৌধুরীর বিচার শুরু