বঙ্গোপসাগরের সম্ভাবনার ১০ ভাগও আমরা কাজে লাগাতে পারছি না

বিশ্ব সমুদ্র দিবসের সেমিনারে বক্তারা

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৯ জুন, ২০২২ at ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গোপসাগরের জলপথকে ব্যবহার করে প্রতিবছর বাংলাদেশে ২৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হতে পারে। কিন্তু এই সম্ভাবনার মাত্র ১০ ভাগ আমরা কাজে লাগাতে পারছি। বর্তমানে আমাদের জ্বালানী তেলের ৩২% থেকে ৩৩% আসে সাগর থেকে। এছাড়া সাগরকে কেন্দ্র করে ট্যুরিজম ও ফিশিং এর এক বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষেত্র গড়ে ওঠেছে। নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে সাগরের তলদেশে থাকা বিশাল খনিজ সম্পদের ভান্ডারকে কেন্দ্র করে। বঙ্গোপসাগরের সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে দেশে সম্ভাবনার নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। আর সম্ভাবনার এই নতুন ক্ষেত্রগুলোও তৈরি করে দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। গতকাল ৮ জুন বিশ্ব সমুদ্র দিবস উপলক্ষে পেঁচারদ্বীপস্থ বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিচার্স ইন্সটিটিউটে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু, বঙ্গোপসাগর ও ব্লু-ইকনোমি’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সচিব ড. মো. কাউসার আহাম্মদ, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী কদর, বাংলাদেশ নৌ-পরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর (অব.) আবু জাফর মো. জালালউদ্দিন ও জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিচার্স ইন্সটিটিউটে সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুব-এ কিবরিয়ার সঞ্চালনায় সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন সেইফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সাদাকা সাজ সিদ্দিক। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম এ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়াল এডমিরাল (অবসরপ্রাপ্ত) খোরশেদ আলম।

এডমিরাল (অবসরপ্রাপ্ত) খোরশেদ আলম বলেন, অর্থনীতি ও উন্নয়নের একটি খোলাক্ষেত্র হল আমাদের বঙ্গোপসাগর। এ সাগরকে ঘিরে রয়েছে আমাদের অপার সম্ভাবনা। আমাদের তটরেখা থেকে ৬৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত উপকূল রয়েছে। অথচ এই উপকূলের মাত্র ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত অংশ আমরা এখন ব্যবহার করতে পারছি। বাকী সাগরে আমরা মাছ ধরতে পারছি না। এ কারণে বায়োটেক বা জৈব প্রযুক্তিতেও আমরা অবদান রাখতে পারছি না। । সমুদ্রসম্পদের উন্নয়ন ও টেকসই ব্যবহারে সংশ্লিষ্টদেরকে একযোগে ‘সমন্বিত’ পদক্ষেপ নিতে হবে। প্লাস্টিক দূষণের কারণে বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য ও সম্পদের উপর এক ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বঙ্গোপসাগরের একটি অংশে ‘ডেডজোন’ তৈরি হয়েছে, যেখানে সাগরের পানি অক্সিজেন শূণ্য হয়ে পড়ায় প্রাণীকূল বসবাস করতে পারে না।

মেরিটাইম এ্যাফেয়ার্স ইউনিট সচিব বলেন, বিশ্বের সাগরগুলোতে বর্তমানে ১৫০ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য রয়েছে। আর তা ২০৫০ সাল নাগাদ ৮১২ মিলিয়ন মেট্রিক টনে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সে সময় সাগরে মাছের চেয়ে প্লাস্টিক থাকবে অনেক বেশি। তিনি যার যার অবস্থান থেকে কার্বন নিঃসরণ ও সাগরে প্লাস্টিক দূষণ কমানোসহ ব্লু-ইকনোমির উন্নয়নে ৭টি কর্মকৌশল বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহতাশ কাদেরের কণ্ঠে গানের কলি
পরবর্তী নিবন্ধআনোয়ারা বেগম