ফুটপাতে নিম্নবিত্তের ভিড়

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১১ মে, ২০২১ at ৪:২১ পূর্বাহ্ণ

দুই ছেলেকে নিয়ে নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকার ফুটপাতে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন পোশাক কারখানার শ্রমিক আয়েশা আকতার। বেতন পেলেই দুই ছেলেকে জামা কাপড় কিনে দেবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। গতকাল তিনি বেতন পেয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন। ঈদের জামা কিনে ছেলেরাও খুশি। এছাড়া ছেলেদের জামা কাপড় কিনে দিতে পেরে তিনিও খুব খুশি। গতকাল আয়েশা আকতারের মতো অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ফুটপাতে ভিড় জমান। তবে বরাবরের মতো স্বাস্থ্যবিধি ছিল উপেক্ষিত। বিক্রেতারা জানান, গত কয়েকদিন ধরে বেচাবিক্রি বেড়েছে।
গতকাল নগরীর নিউ মার্কেট, জহুর হকার্স মার্কেট, আমতল, আগ্রাবাদ, আন্দরকিল্লা, টেরিবাজার, বহদ্দার হাট এলাকার ফুটপাত ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতার চাপের কারণে বিক্রেতাদের দম ফেলার ফুসরত নেই। স্বাভাবিক দিনগুলোতে নগরীতে শুধুমাত্র বিকেলে বিক্রেতারা ফুটপাতে বসলেও এখন দিন রাত তাদের ব্যস্ততা চলছে। ভ্যানে এবং ফুটপাতে চৌকি বসিয়ে থরে থরে বিভিন্ন ডিজাইনের জামা কাপড় সাজিয়ে বিক্রি করছেন তারা। নিম্নবিত্ত মানুষরা সেই সব পণ্য খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছেন এবং দরদামে মিললে টাকা পরিশোধ করে বাড়ির দিকে পা বাড়াচ্ছেন।
আইয়ুব আলী নামের একজন বিক্রেতা দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে বিক্রি বেড়েছে। প্রথমদিকে কিছু পুলিশ এসে ডিস্টার্ব করতো। তাই ব্যবসা করতে পারবো কিনা, এটি নিয়ে ভয়ে ছিলাম। সে কারণে বেশি জামা কাপড় কিনিনি। কারণ বিক্রি না হলে পুরোটাই লস। গত বছর সব কিছু বন্ধ ছিল, খুবই মানবেতর দিন কাটিয়েছি। এ বছর এখন পর্যন্ত খুব ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে, এটিই আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক।
দিনমজুর আলী আহমদ বলেন, নিজের জন্য কিছুই কিনিনি। বউ বাচ্চাসহ ৬ জনের সংসার। বউ আর বাচ্চার জন্য কিছু কেনাকাটা করতে এসেছি। তবে গত বছরের চেয়ে দাম একটু বেশি।
আগ্রাবাদ মোড়ের ফুটপাতের বিক্রেতা সেলিম উদ্দিন বলেন, বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে। তবে মাঝেমধ্যে পুলিশ এসে ডিস্টার্ব করে। আমরা ভ্রাম্যমাণ হকার। সামান্য ব্যবসা করে খাই। সৈয়দ আলী নামের অপর এক বিক্রেতা বলেন, বড়দের প্রতিটি শার্ট বিক্রি করছি আড়াইশ থেকে তিনশ টাকায়। এছাড়া প্যান্ট বিক্রি করছি ২শ থেকে ৩শ টাকার মধ্যে। বেচাবিক্রি আগের বছরগুলোর তুলনায় মন্দা। এখনো অনেক মানুষ বেতন পায়নি।
হালিশহর থেকে আসা ক্রেতা মোহছেনা বেগম জানান, গরীব মানুষদের একমাত্র ভরসা এই ফুটপাত। এখানে কম টাকায় ভালো জিনিসটি কিনতে পাওয়া যায়। তাই প্রতি বছর ফুটপাত থেকে কাপড় চোপড় কিনতে আসি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিটি গেটে আটকে দেয়া হলো ১৭০ গাড়ি
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে দুই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪