প্রত্যেক মানুষের একে অপরের সহযোগিতা প্রয়োজন

আজিজা রূপা | মঙ্গলবার , ২৪ মে, ২০২২ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

ক্ষমতা টেবিলের এপার ওপার, সাহায্য, নিয়ম, আইন, আপনি যদি আইন দেখাতে যান, প্রতি পদক্ষেপে আইন দেখাতে পারেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমরা সবাই কিন্তু ছোটো ছোটো আইন গুলো কেউই মানি না। তবে অন্যকে মানাতে উঠে পড়ে লাগি। আর এটা আমরা করে থাকি অন্যকে সাহায্য না করার জন্য, অন্যকে আটকানোর জন্য। তবে এটাও কিন্তু সত্য সব আইনেরই ফাঁকফোঁকর থাকে যেটা আমরা একে অন্যকে সাহায্য করতে ব্যবহার করতে পারি। কারণ আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের উপর ক্ষুদ্র কিংবা বিশদভাবে একে উপরের সাহায্যের উপর নির্ভরশীল। মনে করেন আপনি একটা প্রতিষ্ঠানের কোনো একটা সেক্টরের দায়িত্বে আছেন।

আপনি সার্ভিস দিচ্ছেন। আপনার প্রতিষ্ঠানের আইন অনুযায়ী আপনি নির্দিষ্ট সময়সীমার বাইরে সার্ভিস দিতে পারবেন না বলে বলা আছে। তো আপনার সেই নির্দিষ্ট সময়সীমার দশ থেকে পনেরো মিনিট পর আপনার কাছ থেকে কেউ নিরুপায় হয়ে সার্ভিস নিতে চাইলো। কিন্তু আপনি কি করলেন যেহেতু চেয়ারে বসে আছেন। সে হামবড়া ভাবে আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের দেয়া আইন দেখিয়ে বিপদে পড়া মানুষটিকে দু চারটা কড়া কথা বলে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিলেন। এক্ষেত্রে আপনি তাকে তাড়িয়ে দিতে পারতেন যদি সে অনেক বেশি দেরী করে আসতো। আইন অমান্য করারও একটা লিমিট থাকে। আইন থেকে সামান্য দূরে কাজ করার কিছু এখতিয়ার ও কিন্তু ক্ষমতায় থাকা মানুষটির হাতে থাকে। কারণ সাহায্য বলে একটা শব্দ আছে। সাধারণ কিছু নিয়মের বাইরে আমরা যেতে পারি।

যেমন রাত বারোটার পর ঘর থেকে বের হওয়া মানা। তাই বলে আমরা জরুরি প্রয়োজনে কিংবা কেউ বিপদে পড়লে তাকে সাহায্য করতে কি বের হই না? আমি ঠিক এই ছোটোখাট নিয়মের বাইরে সাহায্য করার কথা বলছি। য হোক, মনে করেন আপনি আজকে যাকে আপনার সামান্য নিয়মের বাইরে গিয়ে উপকার করলেন না। কালকে হয়ত তার কাছে আপনার সাহায্য চাওয়ার সময় এসে যাবে। এবং আসেও এবং আমরা তা গ্রহণও করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা ভুলে যাই। কেউ নিজের পরিবারকে দেয়া সময় বঞ্চিত করে আপনার প্রয়োজনে আপনার স্বার্থে আপনাকে সময় দেয়। কেন? সম্পর্কের খাতিরে। কিন্তু আপনি আরেকদিন তাকে অন্য কোনো ভাবে সাহায্য করতে গিয়ে নিজের নিয়মের বাইরে একরত্তিও যেতে চান না। উল্টা আজেবাজে দু’চারটা কথা শুনিয়ে দেন।

সেই উপকারের, সেই ত্যাগের কথা মনে রাখেন না। এটাই হচ্ছে স্বার্থপরতা, অকৃতজ্ঞতা। শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবা। নিজের অবস্থান নিয়ে ভাবা। কিন্তু আমরা আসলে প্রতিটা মানুষের উপর একে অপরে নির্ভরশীল। নিয়ম আমি মানাতে চাইলে আমি নিজে আগে মানতে হবে। নয়ত ছোটোখাট নিয়মের বাইরে সবাইকে একে অপরের জন্য যেতে হবে। সব নিয়ম তো আর হাইকোর্ট জর্জকোর্ট জারিতো নয়। মানুষ মারা গেলেও কিন্তু নিজে নিজে গিয়ে কবরে শুতে পারে না, কিংবা আগুনে পুড়ে সৎকার হতে পারে না। আজ আপনি মারা গেলেন আপনাকে কেউ বা কারা কবরে নিয়ে গিয়ে মাটি চাপা দিয়ে আসবে, সৎকার করবে। হয়ত একদিন আপনিও কাউকে মাটি চাপা মানে কবর দিয়েছেন অথবা সৎকার করেছেন। অথচ এ কথাটা আমারা দিব্যি ভুলে যাই। আসলে মানুষমাত্রই একে অপরের জন্য।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযার যা আছে তাতে সন্তুষ্ট থাকাতেই সুখ
পরবর্তী নিবন্ধস্মরণে শ্রদ্ধায় শিক্ষাবিদ কাঞ্চন কান্তি বড়ুয়া