তিন দিন ধরে চলা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটে প্রত্যাশিত ফলাফলই পাওয়া গেছে। নিরঙ্কুশ জয় নিয়ে পঞ্চমবারের মত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার রাজনীতি এমনকি দেশটির নির্বাচন ব্যবস্থার উপরও যে ক্রেমলিনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। তা বলে ৮৭ শতাংশ ভোট? পুতিন এত ভোট দিয়ে কী করবেন? কিংবা পুতিনের পঞ্চম মেয়াদ কেমন হবে? এসব প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, পুতিনের চতুর্থ মেয়াদের শাসন ব্যবস্থার মতই হতে চলেছে পঞ্চম মেয়াদ। খুব বেশি পার্থক্য আশা না করাই ভালো। বরং চতুর্থ মেয়াদের মত পঞ্চম মেয়াদেও পুতিন বিদেশে যুদ্ধ এবং দেশে ধরপাকড় চালিয়ে যাবেন বলেই বিবিসির এক প্রতিবেদনে ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
যার অর্থ, ইউক্রেন যুদ্ধ যেমন চলছিল তেমনই হয়তো চলবে। পশ্চিমাদের সঙ্গে পুতিনের বিরোধও আগের মতই থাকবে। সেইসঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে একটি আদর্শিক প্রচারাভিযান আরো সামনে অগ্রসর হবে। যেখানে পুতিন রাশিয়াকে একটি ক্রমবর্ধমান সামরিক সমাজে রূপান্তরিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। রাশিয়ার নাগরিক সমাজ আগে থেকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে। পুতিনের নতুন মেয়াদে যে চাপ আরো বাড়বে।
এবারের নির্বাচনে পুতিন ৮৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। যা সত্যিই আশ্চর্যের। যদিও এটাও সত্যি যে, পশ্চিমা বিশ্ব কোনোভাবেই এটা মেনে নেবে না যে রাশিয়ায় স্বচ্ছ ভোট হয়েছে এবং নিজ দেশে পুতিন এতটাই জনপ্রিয় যে ৮৭ শতাংশ ভোটার তাকে ভোট দিয়েছেন। রাশিয়ায় ভোটের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, ‘এভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না।’
তবে পশ্চিমারা যত কথাই বলুক, ক্রেমলিন এখন এটা বলতে পারবে যে, পুরো দেশ পুতিনের পেছনে একত্রিত হয়েছে এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার উপর জনগণের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, তিনি এখন ইউক্রেনে তার যুদ্ধের জন্য এবং তিনি দেশকে যে পথে নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, দেশে তার জনপ্রিয়তা রয়েছে বলে দাবি করতে পারবেন।
৮৭ শতাংশ ভোট রাশিয়ার রাজনীতির মোড়লদের জন্যও একটি স্পষ্ট বার্তা। সেটা হলো: ‘মাথায় রাখুন, এখনও এখানে একজনই সর্বেসর্বা। সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ তারই হাতে এবং খুব শীঘ্রই এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’