পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে গতকাল বৃহত্তর চট্টগ্রামে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ১৭জন, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ৭জন এবং স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ২ চেয়ারম্যান প্রার্থী ।
চন্দনাইশের ৭ উপজেলার মধ্যে গতকাল ৬ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হয়েছে। এক ইউপিতে আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। গতকালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৩ জন, বিদ্রোহী ৩জন। আনোয়ারায় গতকালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের ৫জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন ১ জন। এর আগে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামীলীগের ৩জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বোয়ালখালীতে ৭ ইউনিয়নের মধ্যে ৬টিতে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন এবং ১টিতে স্বতন্ত্র হিসাবে এক বিএনপি নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। খাগড়াছড়ির ৪ ইউপির মধ্যে ২টিতে নৌকার প্রার্থী ও দুইটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। বান্দরবানে সদর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ২টি স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং ১টি’তে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
বোয়ালখালী প্রতিনিধি জানান, এ উপজেলার শাকপুরা ইউপিতে আব্দুল মান্নান মোনাফ (নৌকা) ৭,৬০১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী গিয়াস উদ্দীন সোহেল (আনারস) পেয়েছেন ৫,১৩৮ ভোট। সারোয়াতলী ইউপিতে মো. বেলাল হোসেন (নৌকা) ৯,৯৮০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী এ এম এম ইউসুফ চৌধুরী (আনারস) পেয়েছেন ১,৫০০ ভোট। পোপাদিয়া ইউপিতে এসএম জসিম উদ্দীন (নৌকা) ৯,০৭৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। এখানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাবু দাশ (টেলিফোন) পেয়েছেন ২,২০৫ ভোট। চরণদ্বীপ ইউপিতে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মোঃ সামশুল আলম ৪,৫১৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নুরুল আমিন খান পেয়েছেন ৩,০৯৫ ভোট। শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউপিতে মোহাম্মদ মোকারম (নৌকা) ৮,০৬৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী জমির উদ্দীন (আনারস) পেয়েছেন ৩১২৫ ভোট। আমুচিয়া ইউপিতে কাজল দে (নৌকা) ৫,৫০৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অনুপম বড়ুয়া পারু (কাস্তে) পেয়েছেন ৯৩৫ ভোট। আহলা করলডেঙ্গা ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা বি এন পির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান হামিদুল হক মান্নান (আনারস) ৫৮৫৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন এখানে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের মনছুর আহাম্মদ বাবুল (নৌকা) পেয়েছেন ৩,৪০৫ ভোট।
আনোয়ারা প্রতিনিধি জানান, আনোয়ারায় ১১ উপজেলার মধ্যে গতকাল চেয়ারম্যান পদে ৬ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ হয়। এর আগে ৩ ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় চেয়ারম্যান হন নৌকার প্রার্থীরা। দুই ইউনিয়নে পরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গতকালের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিতরা হলেন বারশত ইউনিয়নে এমএ কাইয়ুম শাহ (নৌকা) প্রাপ্ত ভোট ১১,৩৬০। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আমিনুল হক চৌধুরী (আনারস) ২৫৩৪। রায়পুর ইউনিয়নে আমিন শরীফ (ঘোড়া).৭,৩৭১, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জানে আলম (নৌকা) ৪৭৫৫, ফজলুল কাদের চৌধুরী (মোটরসাইকেল) ৪,১২৯ । বরুমচড়া ইউনিয়নে জয়ী হয়েছেন সামশুল ইসলাম (নৌকা) ৪,৫২৬, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহাদত হোসেন চৌধুরী (সিএনজি) ৩,৪৭৪ , আবুল বশর (আনারস) ৩,৩২৫। আনোয়ারা সদর ইউনিয়নে জয়ী হয়েছেন অসীম কুমার দেব (নৌকা) ৪,০৮৫। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দিদারুল ইসলাম চৌধুরী টিপু (মোটরসাইকেল) ২,২৪৯, শহীদুল ইসলাম (আনারস) পেয়েছেন ২৯২ ভোট। পরৈকোড়া ইউনিয়নে মামুনুর রশিদ চৌধুরী আশরাফ (নৌকা) ৮,৯০৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজিম উদ্দিন (মোটরসাইকেল) পেয়েছেন ১,৭৫৮ ভোট। হাইলধর ইউনিয়নে কলিম উদ্দিন (নৌকা) জয়ী হয়েছেন ৯,৯৮০ ভোট পেয়ে।তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মা. সোলেমান (আনারস) পেয়েছেন ১,৬৭১ ভোট, আবু তাহের (চশমা ) পেয়েছেন ১,৫৪৪ ভোট।
চন্দনাইশ প্রতিনিধি জানান, চন্দনাইশে ৭ ইউনিয়নে গতকাল বুধবার ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। এতে ৪ জন আওয়ামীলীগ মনোনীত এবং ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন ধোপাছড়ি ইউনিয়নে আ’লীগ মনোনীত মো. আবদুল আলিম (নৌকা), তিনি পেয়েছেন ৩,১৫৭ ভোট, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মোরশেদুল আলম (আনারস), পেয়েছেন ১,৭১৫। হাশিমপুর ইউনিয়নে জয়ী হয়েছেন এড. খোরশেদ বিন ইসহাক (নৌকা)। তার প্রাপ্ত ভোট ৪,৭৪১, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীরুল ইসলাম চৌধুরী (চশমা) পেয়েছেন ২,৩৭০। বৈলতলী ইউনিয়নে আ’লীগ মনোনীত এসএম সায়েম (নৌকা) পেয়েছেন ৭,৮৪৫। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ারুল মোস্তফা চৌধুরী দুলাল (আনারস) পেয়েছেন ৩,৫২৪। কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল শুক্কুর কোম্পানি (আনারস) জয়ী হয়েছেন ৬,৬০২ ভোট পেয়ে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগ মনোনীত এড. আবু ছালেহ (নৌকা) পেয়েছেন ৪,৫০২। বরকল ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রহিম চৌধুরী ( আনারস) জয়ী হয়েছেন ৫,৪০৪ ভোট পেয়ে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগ মনোনীত মুক্তিযোদ্ধা ফেরদাউছ ইসলাম খান (নৌকা) পেয়েছেন ১,৯৪৩, বরমা ইউনিয়নে জয়ী হয়েছেন মো. খোরশেদ আলম টিটু ( ঘোড়া), তার প্রাপ্ত ভোট ৪,৪০৪। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম (নৌকা)। তার প্রাপ্ত ভোট ৪,০৪৩।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়ির পেরাছড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে নৌকার প্রার্থী তপন বিকাশ ত্রিপুরা । তিনি পেয়েছেন ৩ হাজার ৮০ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাথী আনারস প্রতীকের প্রার্থী মিল্টন চাকমা পেয়েছেন ২৭শ ৬ ভোট। ভাইবোনছড়া ইউনিয়নে নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন সুজন চাকমা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট ৫ হাজার ১৩৯ । তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী পরিমল ত্রিপুরা পেয়েছেন ৪ হাজার ৭শ ৫২ ভোট। খাগড়াছড়ি সদর ইউপিতে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জ্ঞান দত্ত ত্রিপুরা । তিনি পেয়েছেন ২ হাজার ৪৪২ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আনারস প্রতীকের প্রীতি বিন্দু দেওয়ান পেয়েছেন ২ হাজার ১ ভোট। কমলছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সুনীল চাকমা । তিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৭৯ ভোট । তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাউপ্রু মার্মা পেয়েছেন ২,২৭৫ ভোট। এদিকে গোলাবাড়ি ইউনিয়নে একটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।
বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, সদর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ১টিতে আওয়ামী লীগ, ১টিতে বিদ্রোহী ও ১টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী এক বিএনপি নেতা বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। কুহালং ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মংপু মারমা পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৩২। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটর সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ২,৫৩৬ ভোট। সূয়ালক ইউনিয়নের আনারস প্রতীকে বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী উক্যনু মারমা পেয়েছেন ৩ হাজার ২৯৫ ভোট। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী মংমংনু মারমা পেয়েছেন ২ হাজার ৭৫০ ভোট। টংকাবর্তী ইউনিয়নে মোটর সাইকেল প্রতীকে আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী মাংয়ং ম্রো প্রদীপ পেয়েছেন ১ হাজার ৪৩৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকে প্রু কান্তি ম্রো পেয়েছেন ৯২৭ ভোট।
