নির্দেশনা মানছেন না আলু বিক্রেতারা

খুচরায় ৩০ টাকা দাম নির্ধারণ কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৫ অক্টোবর, ২০২০ at ৪:৫৫ পূর্বাহ্ণ

সরকারিভাবে দাম বেঁধে দেয়া হলেও বাজারে আলুর দাম বেশ চড়া। খুচরা বাজারে ৩০ টাকা দরে আলু বিক্রি করার জন্য সরকারিভাবে নির্দেশনা দেয়া হলেও গতকাল আলু বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে। সরকার আলুর দাম তিন পর্যায়ে নির্ধারণ করে দিয়েছে। এরমধ্যে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, পাইকারিতে ২৫ ও হিমাগার থেকে ২৩ টাকা দরে আলু বিক্রির কথা বলা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনার বাইরে গিয়ে বাড়তি দরে আলু বিক্রি করা হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। গতকাল কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে আলুর দর নির্ধারণ করে দেয়া হয়। ইতোমধ্যে এই নির্দেশনার চিঠি দেশের সকল জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৩০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে সেই আলুর দর উঠে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আলুর পাইকারী বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে খুচরা বাজারে দাম বেড়ে যায়। খুচরা বাজারের মধ্যে আবার কাঁচাবাজার ও মুদি দোকানের দরেও পার্থক্য হয়ে যায়। কাঁচাবাজারের চেয়ে মুদির দোকানে কেজি প্রতি পাঁচ সাত টাকা বাড়তি দরে আলু বিক্রি হয়েছে। ৫৫/৬০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া আলু গতকাল বিভিন্ন দোকানে গতকাল ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। অবশ্য কাঁচাবাজারে গতকাল ৪৫ টাকা দরে আলু বিক্রি হতে দেখা গেছে। রাস্তায় রাস্তায় ঠেলাগাড়িতেও ৪৫ টাকা দরে আলু বিক্রি হয়েছে।
আলুর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা বেশ কয়েকটি কারন দেখিয়েছেন। তাদের মতে গত মার্চ এপ্রিল থেকে শুরু করে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতার মাঝে দেশব্যাপী বিপুল পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ হয়েছে। এসব ত্রাণের প্রতিটি প্যাকেটেই আলু একটি কমন আইটেম ছিল। এতে করে প্রচুর আলুর ব্যবহার হয়েছে। অন্যান্য সবজি ক্ষেতে নষ্ট হয়েছে। ঘরে ঘরে আলু পৌঁছে গেছে। মানুষ আলু ব্যবহার করেছে। এতে করে আলুর মজুদ শেষ পর্যায়ে।
এছাড়া আলুর উৎপাদন কম হওয়ার কথা উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বন্যায় নতুন আলুর রোপণ করাও সম্ভব হয়নি। উল্টো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অন্যান্য সবজির দামও ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বেড়ে গেছে আলুর দাম। অবশ্য ক্রেতারা এ বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, সিন্ডিকেটের কারসাজিতে আলুর দাম বেড়েছে। সরকার যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারলে আলুর দাম কমে আসবে।
গতকাল সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে আলুর দাম বেঁধে দেয়া হয়েছে। তিনটি পৃথক ধাপে আলুর দর নির্ধারণ করা হয়েছে। হিমাঘার থেকে পাইকারি বাজার হয়ে খুচরা বাজার পর্যন্ত আলুর দর বেঁধে দিয়ে তা অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত এই দরের অর্থাৎ খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, পাইকারিতে ২৫ ও হিমাগার থেকে ২৩ টাকা দরে আলু বিক্রির করা না হলে প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সরকার নির্ধারিত দরে গতকাল চট্টগ্রামের কোথাও আলু বিক্রি হয়নি বলে উল্লেখ করে সূত্র বলেছে, সরকারের এই নির্দেশনা আজ বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাড়ে ৩৪ হাজার ইয়াবাসহ আটক ৮
পরবর্তী নিবন্ধরিমান্ড শেষে সাহেদ কারাগারে