নার্সের শ্লীলতাহানির অভিযোগ হাসপাতালের মালিক গ্রেপ্তার

ছাত্রলীগ নেতাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে পাল্টা চাঁদাবাজির মামলা

মীরসরাই প্রতিনিধি | বুধবার , ১৭ আগস্ট, ২০২২ at ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ

মীরসরাইয়ে বড়তাকিয়া চক্ষু হাসপাতালের মালিক ডা. মো. জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এক নার্সকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। ওই নার্স মীরসরাই থানায় মালিকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে গত ১৫ আগস্ট সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, হাসপাতালের মালিক জসীম উদ্দিন ৬ আগস্ট তাকে নিজের কক্ষে ডেকে পাঠান। এ সময় হাসপাতাল প্রায় লোকশূন্য ছিল। তিনি মালিকের কক্ষে গেলে জসীম দরজা বন্ধ করে দিয়ে শ্লীলতাহানি করেন। তিনি কক্ষ থেকে দৌড়ে বের হয়ে বিষয়টি তার খালাতো ভাই নুর হাসান ও প্রতিবেশী মীরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ করিমকে জানান। ঘটনার পর হাসপাতালের মালিক জসীম উদ্দিন চট্টগ্রাম শহরে চলে যান। ১৩ আগস্ট তিনি হাসপাতালে আসেন।
তার হাসপাতালে আসার খবর পেয়ে নার্সের খালাতো ভাই নুর হাসান, মাসুদ করিমসহ কয়েকজন গিয়ে জসীমের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু সমাধানে ব্যর্থ হলে তারা ওই নার্সকে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার পরামর্শ দেন।
ওই নার্স বলেন, তিনি অভিযোগ নিয়ে থানায় আসার আগেই জসীম উদ্দিনের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ করিমসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
তিনি জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে চেয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কেউ চাঁদা চায়নি। শ্লীলতাহানির ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই অভিযোগ করা হয়েছে।
চাঁদাবাজির মামলায় জসিমের স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিন অভিযোগ করেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে শেখ তুরিন, ইউছুফ, মাসুদ করিম, আবির, সোহেল ও হাসান তার স্বামীকে জোরপূর্বক হাসপাতালের একটি কক্ষে আটকে রাখে। তারা হাসপাতালের অভ্যর্থনা ডেস্কে থাকা এক নার্সকে তার স্বামীর সাথে জড়িয়ে বিভিন্ন কথা বলে এবং ৩০ লাখ টাকা দেনমোহরের বিনিময়ে বিয়ে করতে চাপ দেয়। বিয়ে না করলে ঘটনার মীমাংসার জন্য সাত লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
অভিযোগ সম্পর্কে মীরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সদ্য ঘোষিত উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাসুদ করিম বলেন, হাসপাতালের মেয়েটি শ্লীলতাহানির বিষয়ে আমাকে জানালে আমি কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছিলাম। এখন উল্টো আমার বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।
খৈয়াছড়া ইউনিয়নের সদস্য গোপাল চৌধুরী বলেন, শ্লীলতাহানির শিকার মেয়েটি আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ঘটনাটি ওই মেয়ের কাছে জেনেছি সোমবার রাতে। তখন বিষয়টি নিয়ে এতই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে আমার কিছুই করার ছিল না। তবে হাসপাতালে চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়টি সত্য নয় এবং আমাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি।
মীরসরাই থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, বড়তাকিয়া চক্ষু হাসপাতালের একটি ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষ দুটি মামলা করেছে। শ্লীলতাহানির অভিযোগে হাসপাতালের মালিক জসীম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। দুটি অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলাকসামে ২ ঘণ্টা সোনার বাংলা দেড় ঘণ্টা সুবর্ণ অবরুদ্ধ
পরবর্তী নিবন্ধএ ইউনিটে উপস্থিতি ৬১ শতাংশ