জনসংখ্যার অর্ধেকই যেখানে নারী, সেখানে তাদের পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ না দিলে সমাজও এগোতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রোকেয়া পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজের অর্ধাংশকে আমরা যদি এগোতেই না দিই, তাহলে কী করে একটা সমাজ দাঁড়াতে পারে। সমাজকে তো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে হবে। এ অনুষ্ঠানে নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতিতে ভূমিকার জন্য পাঁচজনকে চলতি বছরের বেগম রোকেয়া পদক দেওয়া হয়। পদকপ্রাপ্তরা হলেন চবি উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার, কর্নেল ডা. নাজমা বেগম, মঞ্জুলিকা চাকমা, বীর মুক্তিযোদ্ধা বেগম মুশতারী শফি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা আক্তার। খবর বিডিনিউজের।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পদকজয়ীদের হাতে সম্মাননা, সনদ ও চেক তুলে দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। করোনা মহামারীর মধ্যে সশরীরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে না পারায় নিজের দুঃখের কথা অনুষ্ঠানে প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আজকে আমাদের মেয়েরা অনেক এগিয়ে গেছে। আমরা চাই আমাদের দেশের মেয়েরা সমানভাবে এগিয়ে যাক। কারণ বেগম রোকেয়াই আমাদের পথ দেখিয়ে গেছেন। সমাজে নারীর ভূমিকার কথা বলতে গিয়ে নিজের মা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিবের কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমার মা, যিনি সারাজীবন আমার বাবার পাশে থেকে এই স্বাধীনতা সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন। যখন আমার বাবা জেলে থাকতেন, তখন দল গঠন থেকে শুরু করে আন্দোলন সংগ্রাম করা বা তার মামলা-মোকদ্দমা দেখা বা আমাদের মানুষ করা, লেখাপড়া শেখানো-সব দায়িত্ব কিন্তু আমার মা নিজে করেছেন।
তিনি বলেন, আমি দেখি সমাজে কত বড় দায়িত্ব তিনি পালন করে গেছেন। অথচ কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ তার ছিল না। কারণ সেই যুগে মেয়েরা একটু বড় হলে তাদের স্কুলে যেতে দেওয়া হত না। পড়তে দেওয়া হত না। আমি দেখেছি, আমার মা খুব জ্ঞানপিপাসু ছিলেন। নিজের চেষ্টায় তিনি অনেক লেখাপড়া করতেন। উল্লেখ্য, নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রতিবছর রোকেয়া পদক দেয় বাংলাদেশ সরকার।