ঢাকা ব্যাংক চকবাজারের ইসলামিক ব্যাংকিং শাখার ১০৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা খেলাপী ঋণ আদায়ে ফয়জুন এসিটিলিন প্লান্টের মালিক ও খুলশীর ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান শাহীনের বিরুদ্ধে এবার জারি মামলা দায়ের হয়েছে। আদালতের পক্ষ থেকে তার প্রতি সমনও জারি করা হয়েছে। গত ২৮ জুলাই চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের মাধ্যমে ব্যাংকের শাখা কর্তৃপক্ষ মামলাটি করে।
ঢাকা ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবী তৌহিদুল আলম জনি আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ছয়টি প্রতিষ্ঠানের নামে ২০১০ সালে ১০৮ কোটি টাকা ঋণ নেন খুলশীর ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান শাহীন। এ ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা করা হয়। চলতি বছরের ৩১ মার্চ এ মামলায় রায়ও ঘোষণা হয়। রায়ে তিন মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধের আদেশ হয়। কিন্তু মিজানুর রহমান শাহীন ওই সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করেননি। আদালতের রায়ের পরও উক্ত ঋণ পরিশোধ না হওয়ায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে গত ২৮ জুলাই ২১৯ কোটি টাকা (মূল টাকা ও মুনাফাসহ) আদায়ে জারি মামলাটি দায়ের হয়। আদালত জারি মামলাটি গ্রহণ করে আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। আইনজীবী তৌহিদুল আলম জনি বলেন, মেসার্স ফয়জুন এসিটিলিন প্লান্ট, মেসার্স আহমেদ মুজতবা রি-রোলিং মিলস্, মেসার্স ফয়জুন অক্সিজেন প্লান্ট, মেসার্স বি আর স্টিল মিলস্, মিশম্যাক ল্যান্ডস্ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড ও মিশম্যাক ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের নামে মিজানুর রহমান শাহীন বিশাল অংকের এ ঋণ নেন। পরে যা খেলাপীতে পরিণত হয়। ঢাকা ব্যাংকের মত দেশের বিভিন্ন ব্যাংকও শাহীনের কাছ থেকে টাকা পায়। এ সব ব্যাংকের কাছে তার খেলাপী ঋণের পরিমাণ আনুমানিক হাজার কোটি টাকা। বলা যায়, শীর্ষ ঋণ খেলাপীদের একজন এ মিজানুর রহমান শাহীন।
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংকিং শাখা, চকবাজারের (সাবেক মুরাদপুর), ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নুর কাসেম জানান, ২০১০ সালে শাহীনের ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগ সুবিধা প্রদান করা হয়। মঞ্জুরিপত্রের শর্তানুযায়ী যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ না করায় তা খেলাপী হয়ে যায়। মামলা দায়েরের পর চলতি বছর আদালত ঋণ পরিশোধ করতে আদেশও দেন। এই রায় কার্যকর করার জন্য কয়েকদিন আগে একই আদালতে অর্থজারি মামলাটি দায়ের করা হয়। আমরা আশা করছি, এই অর্থজারি মামলার মাধ্যমে এই ঋণখেলাপীর কাছ থেকে অতি দ্রুত খেলাপী ঋণ আদায় করা সম্ভব হবে। ঢাকা ব্যাংক সূত্র জানায়, বিভিন্ন ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে মিজানুর রহমান শাহীন বর্তমানে পরিবারসহ কানাডা অবস্থান করছেন।