ঢাকার যুব মহাসমাবেশে চট্টগ্রাম থেকে যাবে কমপক্ষে ৬০ হাজার লোক

প্রস্তুতি সভায় ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম নতুন কমিটিতে কারা আসবেন জানি না, তবে কোনো ধরনের দুর্নীতি হবে না

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৩ নভেম্বর, ২০২২ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম বলেন, আমার বিশ্বাস ১১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যুব সমাবেশে বিএনপির জনসভা থেকে এক হাজার গুণ বেশি মানুষের সমাগম ঘটাতে পারবো। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে এ বাংলাদেশের মানুষকে দেখিয়ে দিবে আওয়ামী লীগ সারাজীবন এক নম্বর দলে ছিল। এখনও এক নম্বর দল। বিএনপি-জামাতকে রুখে দিতে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কাউকে লাগবে না, এ যুবলীগ একাই যথেষ্ট।
যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম বলেন, ১১ নভেম্বর যুবলীগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন। কারণ, করোনার পর প্রধানমন্ত্রী কোনো প্রোগ্রামে সশরীরে উপস্থিত হননি। প্রায় আড়াই বছর পর যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সুবর্ণ জয়ন্তীতে যুব মহাসমাবেশে সশরীরে উপস্থিত হবেন তিনি। আর সশরীরে উপস্থিত থাকার জন্য যুবলীগের ৫০ বছর পূর্তিকে সিলেক্ট করেছেন তিনি। এটা যুবলীগের জন্য গর্বের এবং গৌরবের। কারণ, যুবলীগ এ ইতিহাসের একটা অংশ হতে যাচ্ছে। সারা বাংলাদেশ টিভির দিকে চেয়ে থাকবে, ১১ নভেম্বর যুবলীগের ৫০ বছর পূর্তিতে কত লোক হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে দেখিয়ে দিতে চাই যুবলীগ কত শক্তিশালী। আমি বিশ্বাস করি, এই চট্টগ্রামে থেকে যুব মহাসমাবেশে কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ হাজার লোক যাবে। অন্য বিভাগ বাদই দিলাম। চট্টগ্রাম থেকে ওখানে সবচেয়ে বেশি লোক থাকবে।
চট্টগ্রামে যুবলীগের নতুন কমিটিতে সৎ লোকেরাই আসবেন উল্লেখ করে শেখ ফজলে নাঈম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির সন্তান শেখ ফজলে শামস পরশকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আপনাদের সবার মনে প্রশ্ন চট্টগ্রামে যুবলীগের কমিটিতে কারা আসছেন, কমিটিতে কি হবে না হবে, এতটুকু আমি জানি না। কিন্তু এতটুকু বলতে পারি, এখানে কোনো ধরনের দুর্নীতি হবে না।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম বলেন, বিএনপি-জামাত তাদের কিছু সংখ্যক লোক নিয়ে সমাবেশ করে জাতিকে দেখাতে চায় তাদের সমর্থন আছে। এখানে কিছু, ওখানে কিছু, বেশি হলে তাদের ৫-৬ হাজার লোক হবে। কিন্তু তারা জাতিকে দেখাতে চায়, তারা লাখ লাখ মানুষের ঢল নামিয়ে দিয়েছে।
শেখ ফজলে নাঈম বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগে প্রধানমন্ত্রী আমাদের কেন দায়িত্ব দিয়েছেন! কারণ, উনি জানেন এখানে কোনো ধরনের বিশৃক্সখলা অথবা দুর্নীতি হবে না বলেই আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। আপনাদের সেটা বুঝতে হবে। আপনারা যদি ভালো না বাসেন তাহলে আমাদেরকে এই চট্টগ্রামের দায়িত্ব দিতেন না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ব্যাপারে-আপনাদের ব্যাপারে আন্তর থেকে চিন্তা করেন। দলের নেতাককর্মীদের মন থেকে ভালোবাসেন। দেশকে নিজের প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন। যে রকম ঠিক বঙ্গবন্ধু চিন্তা করতেন। পাকিস্তানি জান্তা বঙ্গবন্ধুর জন্য কবর খনন করেছিলেন। তখন উনি বলেছিলেন, ‘ভাই তোমরা যদি আমাকে মেরে ফেলো ঠিক আছে। কিন্তু আমার লাশটা বাংলাদেশের মাটিতে পাঠাই দিও।’
প্রধানমন্ত্রীর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীরকে আঠারো বারেরও বেশি হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু উনি কি কখনও পিছপা হয়েছেন? কেন হননি? কারণ, আমাদের জন্য হননি। যদি উনি সরে যেতেন তাহলে আমাদের কি অবস্থা হতো জানেন! আজকে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে তো তারা একদিনেই দশ লাখ লোক মেরে ফেলবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মারবে। এটা কি আমরা কখনও হতে দিব! তাই আমরা যুবলীগের কর্মীরা আগামী এক বছর পর ভোটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করবো।
শেখ ফজলে নাঈম বলেন, বিএনপি উল্টো প্রশ্ন করে প্রধানমন্ত্রীকে রিজার্ভের টাকা কই গেল, ডলার কই গেল? আরে ডলার গেল পদ্মা সেতু করতে। ডলার যাচ্ছে এতো মানুষের খাবার কিনতে। এ প্যান্ডামিকে বিভিন্ন মানুষকে টাকা দিয়েছেন উনি, প্রণোদনা দিয়েছেন, টানেল করেছেন। এমন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ উনি করেছেন, এসব জায়গায় টাকা গিয়েছে। আপনারা যদি বিরোধিতার জন্য শুধু বিরোধিতা করেন, তাহলে এখানে আর কিছু বলার নেই। আর আপনারা বিরোধিতা করেন, আমরা আমাদের উন্নয়নমূলক কাজ চালিয়ে যায়। আর ইনশাল্লাহ আগামী নির্বাচনে আমরা আবার শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করবো।
বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে শেখ নাঈম বলেন, আপনারা (বিএনপি) মনে করেছেন যে, আপনাদের আমলেও বাংলাদেশ এখনো রয়ে গেছে! সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে! আর মানুষ সেটা বিশ্বাস করে বসে থাকলো। তিল তিল করে কঠোর পরিশ্রম করে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছেন। এখন গুগলে সার্চ দিলেই যেকোনো জিনিস সামনে চলে আসে। এখন কি আর মানুষ অশিক্ষিত আছে, এখন ৭০ ভাগ মানুষ হচ্ছে ইয়াং জেনারেশনের। সবাই শিক্ষিত।
বিএনপির মহাসচিক মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাদের কাল্পনিক আর ভূয়া কথা এখন কেউ বিশ্বাস করে না। আপনি যে মসৃণ মিথ্যাবাদী সেটা সবাই জানে। আপনার মুখে জীবন্ত মিথ্যা সব সময় লেগে থাকে। মানুষজন আপনাকে প্রত্যাখ্যান অলরেডি করে দিয়েছে, আরও করবে। আর এক বছর পর নির্বাচন। নির্বাচনে আমরা আবার আওয়ামী লীগ সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করবো। আর আপনারা বসে বসে শুধু দেখেন এবং আরও ৫ বছর বসে থাকবেন।
কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, যুবলীগের সুবর্ণ জয়ন্তী বাংলাদেশের ইতিহাসে ঐতিহাসিক দিন। ইতিহাসের সাক্ষী হতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী যুবলীগ নেতৃবৃন্দ মুখিয়ে আছে। তাদের এই আকাক্সক্ষা আগামী ১১ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রতিফলিত হবে।
সভায় বক্তব্য দেন, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু মুনির মো. শহিদুল হক রাসেল, মহানগর যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মীর মো. মহিউদ্দিন, উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমান, সহ-সম্পাদক নাসির উদ্দীন মিন্টু, মহানগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম দিদার, মাহবুবুল হক সুমন, উত্তর জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল আলম, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পার্থ সারথি চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিট, রেজাউল করিম বাপ্পী প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাথে থাকা ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিতে বন্ধুকে হত্যা
পরবর্তী নিবন্ধশিক্ষক নিয়োগে অনিয়মসহ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তদন্তে দুদক