হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণাকে উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গত সোমবার ঝর্ণার বাবা ওলিয়ার রহমান তার মেয়েকে জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার করতে কলাবাগান থানায় জিডি করেন। ওই জিডির ভিত্তিতেই গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বসিলার একটি বাসা থেকে ঝর্ণাকে উদ্ধার করে ডিবি। ডিবির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মো. আসাদুজ্জামান ঝর্ণাকে উদ্ধার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঝর্ণাকে উদ্ধার করে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে। বিকেলে তাকে তার বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
কলাবাগান থানায় করা জিডিতে ওলিয়ার রহমান বলেন, মামুনুলের অপকৌশলে ঝর্ণার সুখের প্রথম সংসার ভেঙে যায়। সেই সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। একপর্যায়ে জীবনের তাগিদে কাজের সন্ধানে ঝর্ণা ঢাকায় আসে। উত্তর ধানমন্ডির একটি বাসায় ঝর্ণা বসবাস করছিল বলে তাকে জানানো হয়। জিডিতে আরও বলা হয়, ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ঘটনার পর তিনি জানতে পারেন, তার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেন মামুনুল হক। ওই ঘটনার পর তিনি তার মেয়ের ঢাকার ঠিকানায় হাজির হয়ে তাকে পাননি। ওলিয়ার রহমানের মনে বিশ্বাস জন্মে, মামুনুল হকের লোকজন তার মেয়েকে অপকৌশল করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখেছেন।
ওলিয়ার রহমান জিডিতে অভিযোগ করেন, দুদিন আগে ঝর্ণা ফোনের মাধ্যমে তার নাতিকে (ঝর্ণার বড় ছেলে) জানান, তিনি গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। তার ওপর চাপ যাচ্ছে। তাকে জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার করতে বলেন। যেকোনো সময় তাকে মেরে ফেলা হতে পারে। তিনি ঢাকায় মামুনুল হকের বোনের বাসায় আছেন। ঢাকায় কোথায় আছেন, জানতে চাইলে ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জিডিতে ওলিয়ার রহমান আরও বলেন, তিনি এই ঘটনা তার নাতির কাছ থেকে জানতে পেরেছেন। এ বিষয়ে তিনিসহ আত্মীয়স্বজন উদ্বিগ্ন, চিন্তিত অবস্থায় দিন পার করছেন। জিডিতে অভিযোগ করা হয়, মামুনুল হকের লোকজন যেকোনো মুহূর্তে তার মেয়েকে অজ্ঞাত স্থানে অসৎ অভিপ্রায়ে আটকে তাকে হত্যার পর লাশ গুম করতে পারে বলে তাদের সন্দেহ হচ্ছে। এমন অবস্থায় তার মেয়েকে জরুরি ভাবে উদ্ধার করা আবশ্যক বলে জিডিতে উল্লেখ করেন তিনি।