অডিটে ঘুষ লেনদেনসহ হয়রানির অভিযোগ বিজিএমএইএর

চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২১ at ৭:১৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের বিরুদ্ধে অডিটে ঘুষ লেনদেনসহ নানা ধরনের হয়রানির অভিযোগ তুলেছে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমএইএ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বন্ড কমিশনারেটের কর্মকর্তারা বলছেন, ঘুষ লেনদেন ও হয়রানির বিষয়টি সঠিক নয়।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, তৈরি পোশাকের ওয়াশিং, এমব্রয়ডারি ও প্রিন্টিংয়ের লক্ষ্যে পণ্য চালান স্থানান্তরের সময় জটিলতা ও হয়রানি করছেন বন্ড কর্মকর্তারা। এছাড়া কারখানা সম্প্রসারণ ও অতিরিক্ত গুদাম ব্যবহার অনুমোদনেও সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে অডিট কার্যক্রম অনুমোদনে অতিরিক্ত অর্থ দাবি ও হয়রানি করা হচ্ছে। পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের কারখানার পুরো এলাকাকে বন্ডেড এলাকা ঘোষণা নিয়ে বিভ্রান্তি এবং কারখানা স্থানান্তর অনুমোদনে অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণসহ জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। অপরদিকে বিজিএমইএর সংশ্লিষ্ট মালিককে না জানিয়ে অডিট না হওয়া প্রতিষ্ঠানের ‘বিআইএন’ লক করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
বিজিএমইএর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না শর্তে বলেন, প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক অডিট কার্যক্রম অনুমোদনে বর্তমানে নির্ধারিত দলিলাদি যাচাই-বাছাই ছাড়াও আমদানি ও রপ্তানি চালানের ওজন পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত পুনঃযাচাই-বাছাইয়ে সময়ক্ষেপণ ও দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ অডিট সম্পাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। পূর্বে অডিট কার্যক্রম অনুমোদনে সর্বোচ্চ ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা ব্যয় হতো। বর্তমানে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হচ্ছে। এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বাধ্য হয়ে মোটা অংকের ঘুষ দিতে হচ্ছে।
বিজিএমইএর নবনির্বাচিত প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, করোনাকালীন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। বৈরী পরিস্থিতির কারণে অনেক পোশাক কারখানার অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। টিকে থাকার জন্য প্রত্যেক পোশাক মালিককে এক প্রকার যুদ্ধ করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে আমাদের সহায়ক হিসেবে কাজ করা উচিত। কারণ রপ্তানিমুখী পোশাক খাত গত বছর করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। মাত্র বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমার কাছে অনেক গার্মেন্টস মালিক ফোন করে বলছেন, বন্ড কমিশনারেটের কতিপয় কর্মকর্তা তাদেরকে হয়রানি করছেন। আশা করি বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার মহোদয়ের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে।
তিনি বলেন, আমার জানা মতে, বর্তমান কমিশনার একজন ডায়নামিক মানুষ। তিনি নিশ্চয়ই আমাদের বক্তব্য শুনে সকল ধরনের অনিয়ম, হয়রানি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার। সরকার ব্যবসা-বাণিজ্য সহজিকরণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা সরকারের সহযোগী। সরকারের সেবা সংস্থাগুলোকে অবশ্যই ব্যবসায়ীদের পালস বুঝে সেবা দিতে হবে। আমরা দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখছি। আমরা হয়রানিমুক্ত সেবা চাই। এটিই আমাদের একমাত্র কথা।
হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার একেএম মাহবুবুর রহমান আজাদীকে বলেন, বিজিএমএইর কিছু কিছু অভিযোগ আমি জানতে পেরেছি। তবে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে আমাকে অফিসিয়ালি জানানো হয়নি।
অডিটে ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কথা হচ্ছে, কেউ টাকা দাবি করলে গার্মেন্টস মালিকরা কেন টাকা দেবেন? যে অফিসারের বিরুদ্ধে তারা অভিযোগ করেছেন আমি তাকে ডেকে সতর্ক করেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধজিডির একদিন পর মামুনুলের কথিত স্ত্রী ঝর্ণা উদ্ধার