জনগণ আমাদের সঙ্গে, আন্দোলনে কিছু করতে পারবে না : প্রধানমন্ত্রী

দেশের প্রথম পাতাল রেল নির্মাণ কাজ উদ্বোধন

| শুক্রবার , ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৯:২২ পূর্বাহ্ণ

আন্দোলন করে কেউ সরকারের ‘কিছুই করতে পারবে না’ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই আত্মবিশ্বাসের কারণ, তার ভাষায়, জনগণ আওয়ামী লীগের ‘পাশে আছে’। আন্দোলনের মাধ্যমে ‘সরকারের পতন ঘটানো হবে’ বলে বিরোধীদের হুঁশিয়ারির মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার সরকারপ্রধান এ মন্তব্য করলেন। এদিন সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের পূর্বাচল ৪ নম্বর সেক্টরে মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন১ এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সেখানে এক সমাবেশে বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ করছে। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। কাজেই আন্দোলন সংগ্রাম করে কেউ কিছু করতে পারবে না। দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি কেউ রুখতে পারবে না। খবর বিডিনিউজের।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। কারণ, আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। কাজেই জনগণ যতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলনসংগ্রাম করে কেউ কিছু করতে পারবে না।

ঢাকায় মেট্রোরেলের যে ছয়টি রুট করা হচ্ছে, তার মধ্যে দ্বিতীয়টির নির্মাণ কাজ শুরু হল এদিন। এই এমআরটি লাইন১ এ রয়েছে দুটি অংশ। এর মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মাটির নীচ দিয়ে ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার অংশে স্টেশন থাকবে ১২টি। পূর্বাচল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত প্রায় ১১ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার এলিভেটেড রেলে থাকবে সাতটি স্টেশন। সব মিলিয়ে ৩১ দশমিক ২৪২ কিলোমিটার লাইন নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ২০২৬ সালের মধ্যে এই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরুর আশা করা হচ্ছে।

সরকারের পরিকল্পনায় ২০৩০ সাল নাগাদ রাজধানীতে মোট ছয়টি মেট্রোরেল রুট উদ্বোধনের কথা আছে। গত ২৮ ডিসেম্বর এমআরটি লাইন৬ উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যাত্রী চলাচল উদ্বোধন করা হয়। চলতি বছরের ডিসেম্বরে দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল এবং ২০২৫ সালের শেষে দিয়াবাড়ী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত চলবে ট্রেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাতাল রেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হল এবং পাতাল রেলে বাংলাদেশের নবযাত্রা শুরু হল। বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, দেশ আরো এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি আর কেউ রুখতে পারবে না। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। এজন্য আপনাদের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।

বাংলাদেশকে বিশ্বে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এটা সম্ভব হয়েছে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে বলেই। এই গণতন্ত্র আছে বলেই বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছে, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ইনশাল্লাহ ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।

সবাইকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অন্যথায় বিপদের শঙ্কা রয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুছি তোমোহাইডও।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী স্বাগত বক্তব্য দেন। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক প্রকল্প পরিচিতি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে এমআরটি লাইন১ এর ওপর একটি ভিডিও চিত্র এবং প্রকল্পের ওপর এটুআই নির্মিত একটি ‘থিম সং’ পরিবেশিত হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাস্টম হাউসে দুদকের অভিযান
পরবর্তী নিবন্ধফেব্রুয়ারিতে এলপিজির দাম বাড়ল ২১%