বিএমএ চট্টগ্রাম শাখা এবং প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির যৌথসভা গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বিএমএ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় নেতৃবৃন্দ সম্প্রতি পটিয়া ও নগরীর দুই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নেতৃবৃন্দ নগরীর মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ায় পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্তু পটিয়ায় সংঘটিত ঘটনায় তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ। এ ব্যাপারে তারা আলটিমেটাম দিয়ে বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম শাখার যেকোনো যৌক্তিক কর্মসূচির সঙ্গে থাকার ঘোষণা দেন।
সভায় বিএমএ সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, ট্রেজারার ডা. আরিফুল আমিন, দপ্তর সম্পাদক ডা. আবুল হোসেন, ইসি সদস্য ডা. সাহেদ এবং মালিক সমিতির পক্ষে সভাপতি ডা. মোহাম্মদ শরীফ (রয়েল হাসপাতাল), সহ–সভাপতি ডা. এ কে এম ফজলুল হক (মেট্রোপলিটন হাসপাতাল), সহ–সভাপতি ডা. এটিএম রেজাউল করিম (পার্কভিউ হাসপাতাল), সেক্রেটারি ডা. লিয়াকত আলী খান (ম্যাঙ হাসপাতাল), সহ–সেক্রেটারি ডা. মাসুদ (ম্যাক্স হাসপাতাল), কোষাধ্যক্ষ ডা. মুহাম্মদ ইউসুফ (ন্যাশনাল হাসপাতাল), ডা. মনিরুজ্জামান (মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল), ডা. অহিদুল আলমসহ অন্যান্য হাসপাতালের মালিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সভাপতি অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. অলক নন্দী এক যৌথ বিবৃতিতে পৃথক দুই ঘটনায় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রিয়াজ উদ্দিন শিবলু ও ডা. রক্তিম দাশের ওপর হামলা ও হাসপাতাল ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১০ এপ্রিল রাতে এক ব্যক্তি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রক্তিম দাশ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য অপারেশন থিয়েটারে পাঠিয়ে অন্য রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। এ সময় ডা. রক্তিম দাশের ওপর রোগীর লোকজন অতর্কিতভাবে চড়াও হয়ে হামলা চালায় এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্ট করে। এ হামলায় ডা. রক্তিম দাশ গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অপরদিকে গত ১৪ এপ্রিল দুপুরে নগরীর ও আর নিজাম রোডের মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালের এনআইসিইউতে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসারত এক শিশুর মৃত্যু হলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রিয়াজ উদ্দিন শিবলুকে হাসপাতালের মেঝেতে ফেলে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা হয়। হাসপাতালের কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালের আইসিউতে ও পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি আইসিউতে চিকিৎসাধীন আছেন।