চাঁদে পানি ও ভবিষ্যৎ

অনিক শুভ | বুধবার , ১৮ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ

অনেক আগে থেকে ধারণা করা হচ্ছে চাঁদে পানি রয়েছে। তবে নাসার বিজ্ঞানীরা যা ধারণা করেছেন এখন তার চেয়ে বেশি পানি থাকার রাসায়নিক প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা। চাঁদের যে অংশে সূর্যের আলো সরাসরি পড়ে, সেখানে পানির অণুর সন্ধান পাওয়া গেছে। ফলে চাঁদে ভবিষ্যতে স্থায়ীভাবে বসবাস করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে চাঁদের উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর সবচেয়ে অন্ধকার এবং শীতলতম অংশে বরফের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এবারের অনুসন্ধান বলছে, চাঁদের শুধু হিমশীতল ও অন্ধকার অংশেই নয়, সম্পূর্ণ পৃষ্ঠেই পানি থাকতে পারে। নাসা নিশ্চিত করেছে যে পৃথিবী থেকে আমরা চাঁদের যে দিকটা দেখতে পাই তার উপরিতলে পানি অণুর অস্তিত্ব আছে।
নেচার এ্যাস্ট্রনমি নামে একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে এক নিবন্ধে আবিষ্কারটির কথা জানিয়েছে নাসার স্ট্রাটোস্ফেরিক অবজারভেটরি ফর ইনফ্রারেড এ্যাস্ট্রনমি- সংক্ষেপে ‘সোফিয়া’। পানির অণুতে দুটি হাইড্রোজেন ও একটি অঙিজেনের পরমাণু আছে। সোফিয়া বলছে, এর আগেও চন্দ্রপৃষ্ঠে কিছু হাইড্রোজেনের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু তা পানির আকারে আছে কি না তা স্পষ্ট হয়নি। তবে এবার চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে ক্লাভিয়াস নামে একটি জ্বালামুখে পানির অণুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। চাঁদের দুই মেরুর যে অংশগুলোতে কখনোই সূর্যের আলো পড়ে না। সেখানে জ্বালামুখগুলোতে বরফের অস্তিত্ব আগেই নিশ্চিত করেছিলেন বিজ্ঞানীরা।
এক ঘনমিটার চাঁদের মাটিতে প্রায় বার আউন্সের একটি বোতলের সমান পানি আছে। তুলনা হিসাবে বলা যায়, পৃথিবীতে সাহারা মরুভূমির মাটিতে যতটুকু পানি আছে তার পরিমাণও চাঁদের মাটিতে থাকা পানির একশ গুণ। তাই বলা যায়, চাঁদের মাটিতে পানির পরিমাণ খুবই কম। হয়তো কোনেকদিন চাঁদের বুকের এ পানি মানুষের পান করার জন্য, খাদ্য চাষ করার জন্য বা রকেটের জ্বালানি তৈরির জন্য ব্যবহার করা হবে। আবার যদি চাঁদের পানিই ব্যবহার করে রকেটের জ্বালানি তৈরির কাজটাও চাঁদের বুকে করতে পারে তাহলে তা অনেক সস্তা হবে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও এটি নতুন কিছু প্রশ্ন তুলছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। সেগুলো হলো পানি কীভাবে সৃষ্টি হয়? কীভাবে তা চাঁদের বাতাসশূন্য পরিবেশে টিকে থাকতে পারে? এই পানিকে কি ভবিষ্যতের মহাকাশচারীদের পক্ষে সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব হবে? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে আরো অনেক অনেক গবেষণার প্রয়োজন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহেমন্ত
পরবর্তী নিবন্ধমার্কিন প্রেসিডেন্ট