চবির আলাওল হল সংস্কারে ধীর গতি, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

নিম্নমানের জিনিস ব্যবহারের অভিযোগ

চবি প্রতিনিধি | সোমবার , ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আলাওল হল সংস্কারের কাজ শুরু হয় প্রায় পাঁচ মাস আগে। ছয় মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কাজ শেষ হয়নি। সংস্কার কাজের দীর্ঘসূত্রতায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বেড়েছে দ্বিগুণ। লম্বা সময় নিয়ে সংস্কার কাজের ফলে ছাত্রদের পড়ালেখার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, ব্যাহত হচ্ছে তাদের দৈনন্দিন কাজে। অপরদিকে সংস্কার কাজে নিম্নমানের জিনিসপত্র ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্টদের থেকে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবত হলের সংস্কার কাজ শুরু হলেও শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। এতে ছাত্ররাই ভোগান্তির শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কাজেও অনেক গাফিলতি আছে। নিয়মিতভাবে কাজ করা হয় না। একদিন কাজ করলে তিনদিন বন্ধ থাকে। তাছাড়া কাজের মান আশানুরূপ হচ্ছে না। টেপটাইস লাগানোর কয়েকদিন পরেই খসে পড়ছে৷

আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নাইম ইসলাম বলেন, হলে যে ধরনের সমস্যাগুলো আছে তার আশানুরূপ প্রতিকারে সংস্কার কাজ হাতে নেওয়ার পরেও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হচ্ছে না। এতে আমরা ছাত্ররাই সংকটে পড়েছি। এই সংকট থেকে উত্তরণে দ্রুত সময়ে কাজ শেষ করলে শিক্ষার্থীরাই উপকৃত হবে। হল কর্তৃপক্ষের এক্ষেত্রে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সংস্কার কাজে নিয়োজিত মো. আবেদ আজাদীকে বলেন, কাজ কতটুকু শেষ হয়েছে আমি জানি না। আমাদের যেভাবে বলে সেভাবে কাজ করি। এখনো অনেক কাজ বাকি আছে। আরও ৪৫ মাস সময় লাগবে কাজ শেষ হতে। আর জিনিসপত্র আমাদের যেটা এনে দেয় আমরা সেটা লাগাই। আমরা থাকতে কিছু নষ্ট হলে সেটা আবার ঠিক করে দেওয়া হয়।

জানা যায়, সংস্কার কাজ শেষ না করেই টাকা দাবি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নিয়মানুযায়ী একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে কাজ করার পরে কাজের রসিদ দাখিল করতে পারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ওই পরিমাণ কাজ হয়নি বলে কর্তৃপক্ষ তাদেরকে জানায়। হল সূত্রে জানা যায়, প্রকৌশল দপ্তর কাজের কোনো ধরনের তদারকি করে না। অনেক ক্ষেত্রে কাজ করার পরেই সেটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) ছৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজল বলেন, আলাওল হল সংস্কার কাজ এখনো অনেকটাই বাকি। এতে শিক্ষার্থীদের অনেক ভোগান্তি তৈরি হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুব ধীর গতিতে কাজ করছে। ঠিকাদারকে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে। কাজের জন্য এখনও কোনো টাকা পরিশোধ করা হয়নি। ওরা কাজের রসিদ দাখিল করেছে। কিন্তু ওই টাকার কাজ হয়নি বলে আমরা জানিয়েছি।

আলাওল হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফরিদুল আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো কাজের দায়িত্বে থাকে প্রকৌশল দপ্তর। তদারকির দায়িত্বও তাদের। আমরা আমাদের ভোগান্তির বিষয়টি প্রকৌশল দপ্তরে জানিয়েছি। যখন যে সমস্যা হয়, সাথে সাথে জানাই তাদের। ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব তাদের। তিনি আরও বলেন, প্রায় ১ কোটি টাকার কাজ। অথচ দৃশ্যমান কোনো কাজ চোখে পড়ছে না। ১০ শতাংশ কাজও শেষ হয়নি মনে হচ্ছে। সার্বিক বিষয়ে আমরা প্রকৌশল দপ্তরকে জানিয়েছি।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার কিরণ বাবু বলেন, এগুলো তো অনেক কথা, মোবাইলে বলা যাবে না। সরাসরি বিস্তারিত বলতে হবে। এখানে হল, ছাত্র ও রাজনৈতিক অনেক ব্যাপার আছে। সব বিস্তারিত না বললে বুঝা যাবে না। নিম্নমানের জিনিসপত্র ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রকৌশল দপ্তর যেভাবে বলে সেই মানের, দামের জিনিস আমরা ব্যবহার করি। আমি কাল আসবো, বিস্তারিত কথা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাতারবাড়ি থেকে চালু হবে প্রথম ফিডার সার্ভিস
পরবর্তী নিবন্ধরুমায় কেএনএফ সদস্যের লাশ উদ্ধার