রুমায় কেএনএফ সদস্যের লাশ উদ্ধার

আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ল শিশুসহ ৪০ জন

বান্দরবান প্রতিনিধি | সোমবার , ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের রুমায় দুর্গম অঞ্চলে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) এক সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা লাশটি উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থলে অস্ত্র ও গুলি পাওয়া গেছে। নিহতের নাম লালথান জুয়াল বম। তার বাড়ি আর্তা পাড়ায়। ঘটনাস্থল থেকে ১টি অস্ত্র এবং ৩০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, সকালে পাইন্দু ইউনিয়নের মুননুয়াম পাড়া এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। এতে ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রধারী এক সন্ত্রাসীর লাশ এবং অস্ত্রগুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় রুমা থানায় মামলা করা হয়েছে।

এদিকে কেএনএফের নির্যাতনে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপি পাড়া থেকে পাড়া প্রধান কার্বারী সাকনাও মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী পালিয়ে রুমা সদরে আশ্রয় নিয়েছে।

পাইন্দু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উহ্লা মং মারমা বলেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে পাহাড়ে জুমে উৎপাদিত ফসল আদাহলুদ এবং বিভিন্ন ফলন তুলতে পারছে না গ্রামবাসী। পাড়াবাসীদের জিম্মি করে খাদ্য সংগ্রহের কারণে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মুয়ালপি পাড়া থেকে পাড়া প্রধান কার্বারী সাকনা অং মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে রুমা সদরে পালিয়েছে এসেছে। তাদের বর্তমানে মারমা এসোসিয়েশনের ক্লাবঘরে আশ্রয় এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রুমা থানার ওসি জানান, সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে রুমা সদরে এসেছে ৪০ জন পাড়াবাসী। তাদের মারমা এসোসিয়েশনের ক্লাবঘরে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে থাকা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন শিবলী বলেন, পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের সাথে নিরাপত্তার বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কেএনএফ নামে পাহাড়ের একটি সশস্ত্র দলের তৎপরতার খবর বেশ কয়েক মাস ধরে আলোচনায় আসছিল। পাহাড়িরা কেএনএফ সংগঠনটিকে ‘বম পার্টি’ নামে চেনে। নিজেদের তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রান্তিক অঞ্চলের অনগ্রসর জনজাতিগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে তুলে ধরে। এ সংগঠন ‘কুকিচিন রাজ্য’ নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চায়; যেখানে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরারা থাকবে না; থাকবে বম, খিয়াং, পাংখুয়া, লুসাই, খুমি ও ম্রোরা।

বান্দরবান জেলায় কেএনএফ নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন অর্থের বিনিময়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে অক্টোবরে সংবাদ সম্মেলন করে জানায় র‌্যাব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবির আলাওল হল সংস্কারে ধীর গতি, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি
পরবর্তী নিবন্ধমোটর সাইকেলে পিকআপের ধাক্কা, ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু