চট্টগ্রামে আনা হলো মুশতারী শফীর মরদেহ

শহীদ মিনারে আজ শেষ শ্রদ্ধা

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

মুক্তিযুদ্ধের শব্দসৈনিক, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবির আন্দোলনের অন্যতম নেতা শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফীর মরদেহ গতকাল চট্টগ্রামে আনা হয়েছে। গত রাতে তাঁর মরদেহ নগরীর এনায়েত বাজার মুশতারী লজে রাখা হয়।
আজ বুধবার সকাল ১০টায় মুশতারী শফীর মরদেহ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হবে। সেখানে প্রদান করা হবে গার্ড অব অনার। এরপর সর্বস্তরের নাগরিক শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হবে। বাদে জোহর জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর চৈতন্য গলি কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
এর আগে গতকাল ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধায় মুশতারী শফীকে শেষ বিদায় জানিয়েছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। গতকাল বেলা সোয়া ১১টার দিকে তাঁর কফিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয়। দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত সেখানে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তার কফিনে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
তার ছেলে মেহরাজ তাহসিন শফী সমবেতদের উদ্দেশে বলেন, আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র রাখতে গিয়ে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। আমরা বাবার আদর-স্নেহ পাইনি। মাকে আমরা একসঙ্গে বাবা এবং মা হিসেবে পেয়েছি। উনিই বাবার দায়িত্ব পালন করেছেন, মায়ের দায়িত্ব পালন করে আমাদের সাতজনকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। আমাদের আশা ছিল, তিনি স্বাধীনতা পদক পাবেন। কিন্তু আমরা এখনো জানি না, তিনি পাবেন কিনা।
মুশতারী শফীর কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্বে তার অসাধারণ ভূমিকা ছিল এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে একজন শব্দসৈনিক হিসেবে তিনি যে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন, জাতি তা কৃতজ্ঞতার সাথে চিরকাল স্মরণ করবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবির আন্দোলনে মুশতারী শফীর ভূমিকা তুলে ধরেন তিনি।
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, তাঁর (মুশতারী শফী) নিকট আত্মীয়স্বজনদের মৃত্যুর পরও তিনি মুক্তিযুদ্ধে সাহসী সৈনিক হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তিনি ধারণ করেছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বিকালে মারা যান বেগম মুশতারী শফী। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। ১৯৩৮ সালের ১৫ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া মুশতারী শফী ছিলেন চট্টগ্রামসহ সারা দেশের প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। চট্টগ্রামের প্রায় সব নাগরিক আন্দোলনে তিনি ছিলেন সক্রিয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুশতারী শফীদের কারণেই বিচার হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের
পরবর্তী নিবন্ধখালেদার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে মতামত শিগগিরই : আইনমন্ত্রী