গুলশানে ফ্ল্যাটে কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ

পাওয়া গেছে ৬টি ডায়েরি, আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় বসুন্ধরা এমডির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

| বুধবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:৪৭ পূর্বাহ্ণ

গুলশানের যে ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে ছয়টি ডায়েরি পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের প্ররোচনায় এই তরুণী আত্মহত্যা করেছেন অভিযোগ করে তার পরিবার ইতোমধ্যে থানায় মামলা করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। এদিকে এ ঘটনায় সায়েম সোবহান আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। পুলিশ বলছে তিনি দেশে আছেন। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ কিছু সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে তিনি দেশের বাইরে চলে গেছেন। খবর বিডিনিউজের।
ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী গতকাল বলেন, ওই তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধারের পর সেখান থেকে তার মোবাইলসহ বিভিন্ন ধরনের আলামত উদ্ধারের সাথে ৬টি ডায়েরি পাওয়া যায়। এসব ডায়েরিতে কী লিখা আছে, তা যাচাই করা হচ্ছে।
পরিবারের মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মুনিয়ার। আর ওই বাসায় আনভীরের যাতায়াত ছিল। তবে এসব বিষয়ে সায়েম সোবহানের কোনো বক্তব্য কোনো গণমাধ্যম পায়নি।
পুলিশ কর্মকর্তা সুদীপ বলেন, ওই ফ্ল্যাটে তরুণী একা থাকার কথা বলা হলেও কে কে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকত, সে জন্য ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ডায়েরির সাথে সেগুলো যাচাই চলছে। মুনিয়ার মৃত্যু কী আত্মহত্যা, তা নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ। তিনি বলেন, আপাতত হ্যাংগিং মনে হলেও প্রতিবেদন থেকে জানা যাবে কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে। এরপরেই তদন্তের গতি নির্ধারণ হবে। এখন আমরা এভিডেন্স কালেকশন করছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর মুনিয়ার লাশ কুমিল্লায় নিয়ে গতকাল দাফন করেছেন স্বজনরা।
গত সোমবার সন্ধ্যায় গুলশান-২ এর ১২০ নম্বর রোডের ওই ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রাত দেড়টার দিকে গুলশান থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান। মুনিয়া ঢাকার একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লায়; পরিবার সেখানেই থাকে। তিনি ঢাকায় একাই থাকতেন গুলশানের ওই ফ্ল্যাটে।
উপ-কমিশনার সুদীপ বলেন, গত ১ মার্চ মুনিয়া ওই ফ্ল্যাটে ওঠে। সব মিলে ১ লাখ ১১ হাজার টাকার ভাড়ার চুক্তি হয়েছিল বাড়িওয়ালার সঙ্গে। মুনিয়ার বোন এবং ভগ্নিপতি ব্যাংকার হওয়ায় বাড়িওয়ালী ভাড়া দিতে রাজি হয়েছিলেন। পুলিশের আবেদনে ইতোমধ্যে সায়েম সোবহানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। তবে তিনি আদৌ দেশে আছেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
উপ-কমিশনার সুদীপ বলেন, তিনি দেশের বাইরে চলে গেছেন কিনা এ ব্যাপারে আমাদের পক্ষ থেকে ইমিগ্রেশনে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তিনি দেশের বাইরে যাননি। বসুন্ধরা এমডি যাতে দেশের বাইরে যেতে না পারেন, সে জন্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাস্ক না পরলে বেতের বাড়ি
পরবর্তী নিবন্ধসংক্রমণ বাড়লেও নমুনা সংগ্রহের বুথ কমেছে