খোঁজ মিলল জাহাজটির

দশ কোটি টাকার চিনির অর্ধেকের বেশি গায়েব

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দশ কোটি টাকারও বেশি চিনি নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়া একটি লাইটারেজ জাহাজের হদিস মিলেছে অবশেষে। তবে ইতোমধ্যে জাহাজটির অর্ধেকেরও বেশি চিনি গায়েব করে দেয়া হয়েছে। চিনির পরিবহন ঠিকাদারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, জাহাজের নাবিকেরা সুকৌশলে চিনিগুলো বিক্রি করে দিয়েছে। অপরদিকে জাহাজের নাবিকদের দাবি একটি ডাকাতদল তাদের জিম্মি করে চিনি লুট করে নিয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। তবে সংঘবদ্ধ একটি চক্র জাহাজের চিনি লোপাট করেছে। লাইটারেজ জাহাজ থেকে বিপুল পরিমাণ মালামাল চুরির ঘটনা উদ্বেগজনক পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান আকিজ গ্রুপের ফুড এন্ড বেভারেজের কাঁচামাল হিসেবে আমদানিকৃত চিনি এমভি লয়েলিটি নামের মাদার ভ্যাসেল থেকে খালাস করে নারায়ণগঞ্জের রূপসীর হাটাবোতে নেয়ার জন্য এমভি দেওয়ান মেহেদী-২ নামের লাইটারেজ জাহাজে বোঝাই করা হয়। লাইটারেজ জাহাজের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের কাছ থেকে গত ১২ ডিসেম্বর জাহাজটি বরাদ্দ নেয়া হয়। মাদার ভ্যাসেল থেকে ২০ হাজার ৩০০ বস্তায় সর্বমোট ১ হাজার ১৫ টন চিনি বোঝাই করে ১৫ ডিসেম্বর সকালে জাহাজটি গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। জাহাজে নাবিকের পাশাপাশি আমদানিকারকের প্রতিনিধির স্কর্ট ছিল।

কিন্তু জাহাজটি গন্তব্যে না পৌঁছলে খোঁজাখুঁজি শুরু করলে মাস্টার জানান, ইঞ্জিনের সমস্যার কারণে জাহাজের মেরামত কাজ হচ্ছে। কাজ শেষ করে জাহাজ গন্তব্যে পৌঁছে যাবে। কিন্তু এক পর্যায়ে জাহাজটির সাথে সকলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সবার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজি এবং নৌ পুলিশের সহায়তায় জাহাজটিকে এখলাসপুর এলাকায় পাওয়া যায়। জাহাজের নাবিকেরা নৌ পুলিশকে জানিয়েছে যে, সংঘবদ্ধ একটি ডাকাতদল জাহাজে চড়াও হয়ে তাদের সকলকে জিম্মি করে এবং মোবাইলগুলো কেড়ে নেয়।

তাদেরকে কখনো মেঘনা, কখনো ষাটনল এবং কখনো এখলাসপুরে নিয়ে গিয়ে জাহাজের চিনিগুলো লোপাট করেছে। অবশ্য পণ্যের পরিবহন ঠিকাদার চট্টগ্রামের মডার্ন লজিস্টিকসের পক্ষ থেকে ডাকাতির বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বলা হয়েছে, ৩ দিন ধরে জাহাজে ডাকাতি হওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক। জাহাজের নাবিকেরা কৌশলে চিনিগুলো বিক্রি করে দিয়ে ডাকাতির নাটক সাজিয়েছে বলে মন্তব্য করে তারা পুলিশকে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের আহ্বান জানিয়েছেন।

জাহাজে থাকা ১ হাজার ১৫ টন চিনির বাজারদর ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। গতকাল উদ্ধার হওয়ার পর দেখা যায় যে, জাহাজটির বেশিরভাগ চিনিই লোপাট করে ফেলা হয়েছে। নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে লোপাটকৃত চিনি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে মডার্ন লজিস্টিকসের স্বত্বাধিকারী পারভেজ আহমেদ দৈনিক আজাদীকে জানিয়েছেন।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ নৌপথে পণ্য পরিবহনে পণ্য লোপাটের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কার্গো এজেন্টস এসোসিয়েশন। সংগঠনের পক্ষ থেকে আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টায় আখতারুজ্জামান সেন্টারস্থ কার্যালয়ে জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদ্বিতীয় আপিল শুনানিতেও করদাতাদের সন্তোষ
পরবর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম আসছেন আজ