কুকুর দিয়ে করোনা পরীক্ষা সাফল্য ৮৮ ভাগ

| বুধবার , ২৬ মে, ২০২১ at ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ

বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাভাইরাসের রয়েছে বিশেষ এক ধরনের গন্ধ। সে কারণে প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে এই ভাইরাসটিকে চিহ্নিত করা সম্ভব। তাদের মতে, লোকজন ভিড় করে এ রকম জায়গায় এ ধরনের কুকুর কোভিডের বিস্তার ঠেকাতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনাভাইরাসের গন্ধ মানুষের নাকে ধরা পড়ে না। কিন্তু প্রশিক্ষিত কুকুর সেটা সহজেই শনাক্ত করতে পারে। দেখা গেছে বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং যাদের খুব একটা উপসর্গ নেই তাদেরকেও তারা চিহ্নিত করতে পেরেছে। খবর বিবিসি বাংলার।
কুকুরের এই পরীক্ষা শতভাগ নির্ভুল নয়। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর এসব কুকুর পজিটিভ কেস শনাক্ত করতে ৮৮ শতাংশ সফল হয়েছে। এর অর্থ প্রতি একশটি ঘটনায় তারা মাত্র ১২ জন আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে পারেনি।
তবে সব কুকুরই করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে পারবে না। এজন্য তাকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রশিক্ষিত কুকুর আলাদাভাবে করোনার গন্ধ শনাক্ত করতে পারে। গবেষণায় যারা কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন এবং যারা হননি, কুকুরকে এই দুই ধরনের ব্যক্তির পায়ের মোজা শুঁকতে দেওয়া হয়। দেখা গেছে, কুকুর করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মোজা আলাদাভাবে চিহ্নিত করতে পারে।
লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিজ্ঞানী প্রফেসর জেমস লোগান বলেন, এ বিষয়ে কুকুরকে দ্রুত প্রশিক্ষিত করে তোলা সম্ভব। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের বিশেষ এক ধরনের গন্ধ আছে। সে বিষয়ে কুকুরকে দ্রুত প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়। পরে এসব প্রশিক্ষিত কুকুর যেসব ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তাদের আলাদা করতে পারে। আমরা দেখেছি, সবচেয়ে দক্ষ কুকুরটি করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে ৯৪ শতাংশ ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। এই ফলাফল সত্যিই আশাপ্রদ। ইংল্যান্ডে এই কাজের জন্য ইতোমধ্যে ছয়টি কুকুরকে প্রশিক্ষিত করে তোলা হয়েছে। মানুষের পরিহিত মোজা, মাস্ক, টি-শার্টসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যখন তারা করোনা শনাক্ত করতে সফল হয়েছে তখন উপহার হিসেবে খাবার দিয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের গন্ধ শোঁকার যে ক্ষমতা, কুকুরের ক্ষমতা তার চেয়ে এক লাখ গুণ বেশি। মাদক ও বিস্ফোরক খুঁজে বের করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী এ ধরনের কুকুর ব্যবহার করে থাকে।
ইংল্যান্ডে দাতব্য সংস্থা মেডিকেল ডিটেকশন ডগসের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ক্লেয়ার গেস্ট বলেন, মানব রোগের গন্ধ শোঁকার বিষয়ে কুকুর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এক বায়োসেন্সর।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, নাক ও মুখ থেকে লালা সংগ্রহ করে দ্রুততম সাধারণ পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে লাগে অন্তত ১৫ মিনিট। সেখানে একটি কুকুর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারে। এর ফলে বিমানবন্দর এবং বড় ধরনের জমায়েতে করোনা মোকাবেলায় প্রশিক্ষিত কুকুর কাজে লাগানো যেতে পারে। এতে সময় ও অর্থ দুটোর সাশ্রয় হবে।
সামপ্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ কিছু কুকুর ক্যান্সার, পারকিনসন্স এবং ম্যালেরিয়ার মতো রোগ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলাইসেন্স ছাড়া পণ্য উৎপাদন বিস্কুট কারখানাকে জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধসীমিত আকারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার অনুরোধ সুজনের