পিলখানা হত্যাকাণ্ডে দায়ের হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় প্রায় ১৬ বছর ধরে আটক ১২৬ জন বিডিআর জওয়ান গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে তারা মুক্তি পান বলে জানিয়েছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় হাইসিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন। এদিকে জামিনে মুক্ত হওয়া ব্যক্তিদের ঘরে ফিরিয়ে নিতে কারাফটকে সকাল থেকে স্বজনরা আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়লে সেই ভিড় বাড়তে থাকে। অনেকে সেখানে মিষ্টি ও ফুল নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন প্রিয়জনের জন্য। যখন বিডিআর জওয়ানরা কারাগার থেকে বের হন তখন কারাফটকে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। খবর বিডিনিউজের।
সিনিয়র জেল সুপার মামুন জানান, ২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় ১২৬ জন জওয়ানের মুক্তির আদেশ বৃহস্পতিবার ভোরে কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই–বাছাই শেষে পর্যায়ক্রমে তাদের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। এর মধ্যে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার–১ থেকে ২৪ জন, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার–২ থেকে ৮৯ জন এবং কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১৩ জন মুক্তি পেয়েছেন। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এই সদস্যরা হত্যা মামলায় খালাস পেলেও বিস্ফোরক মামলার কারণে কারাগারে আটকে ছিলেন প্রায় ১৬ বছর ধরে।
গত রোববার ঢাকার বিশেষ ট্রাইবুনাল–২ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর মঙ্গলবার জামিনপ্রাপ্ত ১৭৮ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। বুধবার তাদের জামিননামা দাখিল করা হয়। এরপর তাদের জামিন সংক্রান্ত নথিপত্র কারাগারে গেলে শুরু হয় মুক্তির প্রস্তুতি।
কারাফটকে আবেগঘন পরিবেশ : ষোল বছর পর কারাগারের উঁচু দেয়ালের বাইরে পা রাখার পর বিডিআরের ইঞ্জিনিয়ার কোরের সদস্য মুজাফফর হোসেন দেখতে পান পরিবারের স্বজনরা ফুল হাতে অপেক্ষা করে আছেন কেবল তার জন্য। এরপর মুজাফফর যখন নাতিদের জড়িয়ে ধরেন, তৈরি হয় আবেগমাখা এক পরিবেশ। বিডিআরের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডাইরেক্টর হাফিজুর রহমান কারাবন্দি ছিলেন বিস্ফোরক মামলার। মুক্তি পেয়ে তিনি কারাফটকের সামনে অপেক্ষা করছিলেন তার স্ত্রীর জন্য । হাফিজুর বলেন, ১৬ বছর আমরা পরাধীন ছিলাম। ছাত্র জনতা জাগ্রত হয়ে আমাদের মুক্ত করেছে।