এসিড নিক্ষেপ বর্বর ও ঘৃণ্য অপরাধ

আপিল বিভাগের রায়

| রবিবার , ৩০ অক্টোবর, ২০২২ at ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ

একজন তরুণীর ওপর এসিড নিক্ষেপ শুধু অমানবিকই নয়, এটা বর্বর ও ঘৃণ্য অপরাধ। কোনো সভ্য সমাজ এ ধরনের অপরাধ মেনে নিতে পারে না। এই এসিড সন্ত্রাসীদের মৃত্যুদণ্ড না দিলে বিচারের নামে তামাশা হবে।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপের দায়ে স্বামী আকবর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। ১০ পৃষ্ঠার এ রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। খবর বাসসের।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, এই মামলায় ১৮ বছরের একজন তরুণীর ওপর এসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে। এটা শুধু ভয়ঙ্করই নয়, হত্যার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। এসিড সন্ত্রাসের কারণে ভিকটিমের মুখমণ্ডল ও শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শরীরের এই ক্ষত তাকে আজীবন বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এই ক্ষত তাকে প্রতিনিয়ত মানসিক যন্ত্রণা দিচ্ছে। যখন একজন নারী এসিড সন্ত্রাসের শিকার হন তখন সেই অপরাধ শুধু সমাজের বৃহত্তর অংশ কেন ভিকটিমের বাবা, মা, বোন, ভাই কেউ তা মেনে নিতে পারেন না। এসব কারণে আদালত আপিলকারী আকবর আলী ওরফে জেলহক মন্ডলের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে। যদি আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি না দিয়ে তার আপিল গ্রহণ করা হয়; তাহলে তা বিচারের নামে তামশা হবে বলেও রায়ে উল্লেখ করে আপিল বিভাগ।

২০০৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি স্ত্রীর গায়ে আকবর আলী এসিড ঢেলে দেয়। এ ঘটনায় পরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমের বাবা শাহজাদপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় ২০০৯ সালে আত্মসমর্পণ করেন আকবর আলী। এরপর সিরাজগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত বিচার শেষে ২০০৯ সালের ২৩ আগস্ট এসিড অপরাধ দমন আইনের ৫ (ক) ধারায় আকবর আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। বিচারিক আদালত থেকে পাঠানো ডেথ রেফারেন্স ও কারাবন্দি আসামির আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আকবর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। এ রায়ের বিরুদ্ধে কারাবন্দি আসামি আপিল বিভাগে আপিল করে। পরে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর সেই আপিল খারিজ হয়ে যায়। সমপ্রতি আপিল বিভাগের এ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন আজ
পরবর্তী নিবন্ধদুই বাংলার হৃদয়বন্ধন মানে না কাঁটাতারের বেড়া