একসাথে এত শিক্ষার্থী বহিষ্কার আগে হয়নি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৪ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ

উচ্ছৃক্সখল আচরণ, দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ানো ও শৃক্সখলা পরিপন্থি কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ডিসিপ্লিনারি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে একজন ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ মোট ৩১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। গতকাল অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক এ ব্যবস্থা নেয়া হয়। শাস্তির আওতায় আসা এসব শিক্ষার্থীর মাঝে ২৩ জন নিজেদের গ্রুপের বলে দাবি করেছে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মীরা। সে হিসেবে বাকি ৮ জন সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।
এদিকে, একসাথে এত সংখ্যক (৩০ জন) শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের ঘটনা চমেক-এ এর আগে ঘটেনি বলে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সময় সংঘটিত ঘটনায় একজন বা দু-চারজন বহিষ্কারের ঘটনা ঘটলেও এর আগে এত সংখ্যক শিক্ষার্থী বহিষ্কারের কথা শুনেননি বলে জানিয়েছেন চমেক-এর প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। তিনি চমেক-এর শিক্ষার্থী ছিলেন। পরবর্তীতে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ২০১০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি চমেক-এর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন। দীর্ঘ প্রায় দশ বছর (২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত) অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। জানতে চাইলে গতকাল রাতে ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আজাদীকে বলেন, একসঙ্গে এত সংখ্যক শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের ঘটনা হয়তো এটাই প্রথম। এর আগে হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমি শুনিনি। যদিও আমার সময়কালে একজন শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছিল। এর আগেও এক বা একাধিক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের কথা জেনেছি। তবে সংখ্যায় এতজন বহিষ্কারের কথা আগে শুনিনি। অবশ্য, অপরাধ বিবেচনায় তাদের শাস্তির আওতায় আনাটা একাডেমিক কাউন্সিল হয়তো যুক্তিযুক্ত মনে করেছে। তাই একাডেমিক কাউন্সিল বড় ধরনের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো এভাবে দিনের পর দিন বন্ধ রাখা সমীচীন নয়।
একই কথা জানালেন বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তারও। তিনিও চমেক-এর শিক্ষার্থী ছিলেন। ছাত্রলীগের রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। পরবর্তীতে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আগে দু-চারজনের বহিষ্কারের কথা শুনলেও একসঙ্গে এত সংখ্যক শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের খবর শুনেন নি বলে জানান ডা. সাহেনা আক্তার। তবে এবার সংখ্যায় বেশি হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণও রয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, মারামারির ঘটনা ছাড়াও ৬ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে অন্য কারণে। হোস্টেল বন্ধ ঘোষণার পর তারা কলেজের নতুন একাডেমিক ভবনের ২য় তলায় ছাত্র সংসদের দরজা ভেঙ্গে সেখানে থাকছিল। আমরা ১৮ নভেম্বর বিষয়টি জানতে পারি। অর্থাৎ তারা বেশ কিছুদিন ধরে সেখানে থেকে আসছিল। কিন্তু ক্যাম্পাসের এখন যে পরিস্থিতি। যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের ছাত্র সংসদের দরজা ভেঙ্গে সেখানে অবস্থান করা বড় ধরনের অপরাধ বলে একাডেমিক কাউন্সিল মনে করেছে। যার কারণে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। এর বাইরে যেহেতু দুটি পক্ষ বিবদমান এবং প্রায়ই সময় তারা সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। যারাই এ ধরণের বিশৃক্সখল আচরণের সাথে জড়িত, তাদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। সে কারণে সংখ্যাটা একটু বেড়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআকিবের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত
পরবর্তী নিবন্ধঅসম্পূর্ণ রাস্তায় বেপরোয়া চলাচল