অসম্পূর্ণ রাস্তায় বেপরোয়া চলাচল

আউটার রিং রোডে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৪ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ

‘কাজ শেষ না হওয়া’ চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড দিনে দিনে ‘মৃত্যুফাঁদ’ হয়ে উঠছে। যানবাহন চলাচল বাড়ার সাথে সাথে রাস্তাটির বিভিন্ন অংশে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। অসম্পূর্ণ রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ি চলাচলই বড় হুমকি বলে সূত্র মন্তব্য করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরীর যান চলাচলে ব্যাপক গতি আনার জন্য পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ১৫.২ কিলোমিটারের চার লেনের আউটার রিং রোড নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সড়কটির নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। বিশেষ করে টানেল নির্মাণের পর সড়কটি নিয়ে নতুন করে কিছু বাড়তি চিন্তাভাবনা করতে হচ্ছে। টানেলের গাড়ি চলাচল নির্ঝঞ্ঝাট রাখার পাশাপাশি পতেঙ্গা এলাকায় চলাচলকারী গাড়িগুলোও যাতে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে সেজন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে ইন্টারসেকশন ডিজাইন। একই সাথে একটি সার্ভিস লেইন তৈরি ও লোকাল গাড়ি যাতে মূল সড়কে ঝামেলা করতে না পারে সেজন্য বিদ্যমান সড়কের কিছুটা নিচে পৃথক একটি সড়ক তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। বাকি রয়েছে ফিডার রোড নির্মাণের কাজও। কাজ শেষ না হলেও অসম্পূর্ণ রাস্তাটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। শহরের ভেতরের রাস্তাগুলো এমনিতেই খারাপ, বিশেষ করে বিমানবন্দর সড়কের বেহাল অবস্থায় প্রতিদিন শত শত মানুষ অসম্পূর্ণ আউটার রিং রোড ধরেই চলাচল করেন। এর সাথে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের অসংখ্য পর্যটক এ পথেই চলাচল করেন। আউটার রিং রোডের লাগোয়া একাধিক প্রাইম মুভার টার্মিনাল, ট্রাক টার্মিনাল ও সর্বোপরি আইসিডিগুলো এই রাস্তা ব্যবহার করছে। এতে রাস্তাটিতে সকাল থেকে গভীর রাত অব্দি শত শত ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, প্রাইম মুভার চলাচল করে।
সূত্র বলেছে, রাস্তাটি দিয়ে ধারণার চেয়ে বেশি গাড়ি চলাচল করছে। বিশেষ করে পণ্যবাহী গাড়ির বিশাল বহর প্রতিদিনই রাস্তাটি দাবড়িয়ে বেড়ায়। একই সাথে রাস্তার একটি বড় অংশ ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, প্রাইম মুভারসহ পণ্যবাহী গাড়িগুলো দখল করে রাখে। রাস্তাটির বিভিণ্ন পয়েন্টে তৈরি হয়েছে অবৈধ পার্কিং এরিয়া। এসব কারণে রাস্তাটিতে যান চলাচল ক্রমাগত হুমকির মুখে পড়ছে। নয়া আপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে উল্টো পথে গাড়ি চলাচল। রাস্তাটির বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ চলছে। কাজের জন্য রাস্তার বিভিন্ন অংশ বন্ধ করে রাখা হয়। কাজের সুবিধার জন্য চার লেনের রাস্তাটির দুই লেন বন্ধ করে অপর পাশ দিয়ে উভয়মুখী গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। আবার কিছুদূর যাওয়ার পর চার লেনে গাড়ি চলে। এতে করে রাস্তাটির কোন অংশ সিঙ্গেল লেন, কোন অংশে ডাবল লেন আবার কোন অংশে উল্টোমুখী গাড়ি চলে। এতে এক ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়।
রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করলেও ট্রাফিক পুলিশের তেমন উপস্থিতি থাকে না। কোন ট্রাফিক সিগন্যালও নেই। গাড়ি চালকরা নিজেদের মতো করে চলাচল করে। এতে উল্টো দিকের গাড়ি সামনে পড়লে প্রায়শঃ দুর্ঘটনা ঘটে। কখনো কখনো দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে গাড়ি নামিয়ে দেয়া হয় সড়কের বাইরে।
এ বিষয়ে ট্রাফিক বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) তারেক আহমেদ বলেন, রাস্তাটিতে কোন ক্রসিং নেই। তাই ট্রাফিক বক্স বা সিগন্যালও নেই। আন্ডার কনস্ট্রাকশন রাস্তাটিতে বেশ সমস্যা আছে। রাতের বেলা বাতি নেই। অবকাঠামো পুরোপুরি তৈরি হয়নি। রাস্তাটির কাজ শেষ হলে এসব সমস্যা থাকবে না।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস দৈনিক আজাদীর সাথে আলাপকালে বলেন, আউটার রিং রোডের উন্নয়নে নানা কার্যক্রম চলছে। বিশেষ করে টানেলের গাড়িসহ বিভিন্ন গাড়ি চলাচলে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে একটি টিম ইন্টারসেকশন ডিজাইন তৈরির কাজ করছে। ডিজাইন তৈরির পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা রাস্তার কাজ শেষ করব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকসাথে এত শিক্ষার্থী বহিষ্কার আগে হয়নি
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গভ্যাক্স মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন