ইফতারের শরবতে বিষ মিশিয়ে স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা

আদালতে মামলা, বায়েজিদ থানাকে তদন্তের নির্দেশ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:১২ পূর্বাহ্ণ

ইফতারের শরবতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ফজলুল হক সুমন নামের বায়েজিদের এক যুবক ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ অলি উল্লাহর আদালতে ভুক্তভোগী স্ত্রী ইসরাত জাহান তোহা নিজেই সিআর মামলা ফাইলের মাধ্যমে এ অভিযোগ দায়ের করেন। শুনানি শেষে আদালত অভিযোগ তদন্ত এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বায়েজিদ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। বাদীর আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, উত্তর কাট্টলীর মেয়ে পিংকি রানী দে। সাগরপাড়ে ঘুরতে গিয়ে পরিচয় হয় ফজলুল হক সুমনের সঙ্গে। সুমন পিংকিকে তার সঙ্গে জুটি বেঁধে টিকটক করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের প্রস্তাব দেয়। সেই থেকে পরিচয়, তারপর ধীরে ধীরে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। এক পর্যায়ে পিংকিকে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়। পিংকি রাজি হয়ে যায় সেই প্রস্তাবে। ধর্মান্তরিত হয়ে পিংকি নতুন নাম গ্রহণ করেন ইসরাত জাহান তোহা।

এখানে শেষ হতে পারত। কিন্তু তা হয়নি। বিয়ের পর ধীরে ধীরে বের হয়ে আসতে শুরু করে টিকটকার সুমনের আসল রূপ। নও মুসলিম তোহা জানতে পারেন তিনি আসলে সুমনের চতুর্থ স্ত্রী। চারটি স্ত্রী ছাড়াও টিকটকার সুমনের সঙ্গে আরো বেশ কয়েকজন নারীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এসব নিয়ে সুমনকে জিজ্ঞেস করার পর থেকেই তোহার উপর চলে দফায় দফায় শারীরিক নির্যাতন। তাকে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বামী সুমনের কাছে আবদার জানায় তোহা। এতে আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সুমন। সুমনের অন্য স্ত্রীরা ততদিনে জেনে যায় তোহা নামধারী পিংকিকে বিয়ে করার কথা।

তোহাকে জীবন থেকে সরিয়ে দিতে সুমনের সঙ্গে চক্রান্তে যোগ দেয় তার দ্বিতীয় স্ত্রীর ভাই ও মা। বেছে নেয়া হয় পবিত্র রমজানের ইফতারের সময়কে। একদিন ইফতারের সময় শরবতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দেয় তারা। পরে তা খেলে তোহা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। সুমন তাকে চমেক হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সহায়তায় তোহাকে হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে রেখে চিকিৎসা করানো হয়।

আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, তোহার জীবনে হঠাৎ করে অমানিশার অন্ধকার নেমে আসে। শুরু হয় শারীরিক, মানসিক নির্যাতন। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ চলে হত্যা প্রচেষ্টা। শেষমেষ থানাও মামলা না নেয়ায় আদালতে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন নির্যাতিতা অসহায় নও মুসলিম নারী ইসরাজ জাহান তোহা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুরাদপুরে সমাজসেবা কার্যালয়ে অভিযান, দালাল আটক
পরবর্তী নিবন্ধবিলুপ্ত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরাই প্রশাসকের দায়িত্বে