ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিতে রুশ হামলা, নিহত ৩৫

আমেরিকার পাঠানো অস্ত্রের গাড়িতে হামলার হুমকি রাশিয়ার কিয়েভের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক নিহত

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ১৪ মার্চ, ২০২২ at ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ

নেটো সদস্যদেশ পোল্যান্ডের সীমান্তবর্তী পশ্চিম ইউক্রেনের লিভভ অঞ্চলের কাছে একটি সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গতকাল রোববার রাশিয়ার একাধিক বিমান হামলায় অন্তত ৩৫ জন নিহত এবং ১৩৪ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের এক কর্মকর্তা। এদিকে আমেরিকা ঘোষণা করেছে, তারা ইউক্রেনকে অতিরিক্ত ২০ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সরঞ্জাম পাঠাবে। রাশিয়া আমেরিকার পাঠানো সেসব অস্ত্রের গাড়িতে হামলা চালানোর বার্তা দিয়েছে। এছাড়া ইউক্রেনের একাধিক শহরে রুশ বাহিনী তাদের বোমাবর্ষণ আরও তীব্র করেছে।
যে ঘাঁটিতে হামলা হয়েছে সেটিতে এর আগে বিদেশি সামরিক প্রশিক্ষকরা কাজে ছিলেন বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। তবে নেটোর একজন কর্মকর্তা বলছেন, ঘাঁটিটিতে নেটো জোটের কোনও সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন না। ওই ঘাঁটিতে নেটোর সদস্য নয় এমন দেশগুলোর কোনও প্রতিনিধি ছিল কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট জানা যায়নি। ইউক্রেনের ওই সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি লিভভ শহরের ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের জেলা ইয়াভোরিভে অবস্থিত। সেখানে রাশিয়া ৩০ টি রকেট ছুড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ছবিতে রুশ হামলার পর ওই এলাকার আকাশে ঘন ধোঁয়াও দেখা গেছে। কর্মকর্তারা হামলার কথা জানানোর আগে গতকাল অঞ্চলটির বাসিন্দারাও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনার কথা জানিয়েছিল। লিভভের মেয়রও সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে টুইটারে এক সাংবাদিক জানিয়েছেন।
কিয়েভের কাছে নিহত যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক : বিডিনিউজের খবর থেকে জানা যায়, ইউক্রেনের রাজধানী কিইভের শহরতলী ইরপিনে দায়িত্ব পালনের সময় নিহত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পদকজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক এবং সাংবাদিক ব্রেন্ট রেন্যঁ। আহত হয়েছেন তার এক সহকর্মী। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল রেন্যঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয় বলে জানিয়েছে ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’।
নিহত রেন্যঁর কাছে নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি পরিচয় পত্র পাওয়া গেছে। তাই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রথমে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের ওই পত্রিকাটির সাংবাদিক বলে পরিচয় দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমস কর্তৃপক্ষ জানায়, রেন্যঁ তাদের হয়ে ইউক্রেনে কাজ করছিলেন না বা তাকে সংবাদ সংগ্রহের জন্য ইউক্রেনে পাঠানোও হয়নি। তার কাছে যে পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে সেটি আগের, অন্য একটি প্রতিবেদনের কাজ করার সময় রেন্যঁকে সেটি দেওয়া হয়েছিল। ২০১৫ সালে শেষবার রেন্যঁ নিউ ইয়র্ক টাইমস- এর হয়ে কাজ করেছিলেন বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি।
রেন্যঁই প্রথম কোনও বিদেশি সাংবাদিক যিনি ইউক্রেন যুদ্ধের বলি হলেন। ৫০ বছরের রেন্যঁ শুধু সাংবাদিক নন, তিনি পদক জয়ী চলচ্চিত্র পরিচালকও ছিলেন। তিনি এইচবিও, এনবিসি এবং নিউ ইয়র্ক টাইমসসহ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক নামকরা সংবাদপত্র এবং মিডিয়ার হয়ে কাজ করেছেন। তিনি ইরাক ও আফগান যুদ্ধের খবরও সংগ্রহ করেছিলেন।
ইউক্রেনের শরণার্থীদেরকে আশ্রয় দিলে মাসে ৩৫০ পাউন্ড : রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাজ্য। এই শরণার্থীদেরকে কেউ আশ্রয় দিলে আশ্রয়দাতার জন্য মাসে ৩৫০ পাউন্ড আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছে সরকার। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইউক্রেনের জন্য বাড়ি।’ প্রকল্পটির আওতায় যুক্তরাজ্যে কোনও আত্মীয়-স্বজন না থাকলেও ইউক্রেনীয় শরণার্থীরা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে সেদেশে যেতে পারবেন। আর যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর যদি কোনও ব্যক্তি বা পরিবার এই শরণার্থীদেরকে বাসায় কমপক্ষে ৬ মাসের জন্য বিনা ভাড়ায় একটি কক্ষ দেন বা থাকার জায়গা করে দেন, তাহলে তারা সরকারের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৩৫০ পাউন্ড ভাতা পাবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছয়মাসের শিশুর দেহে বসল অন্যের হৃদপিণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধদুপুরে ঢাকায় পৌঁছাবে হাদিসুরের মরদেহ