ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সকালে আমেরিকানদের গালি দিয়ে বিকেলে ফুলের তোড়া নিয়ে হাজির হয় বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এসময় তিনি বলেন, বিএনপি অফিসে কত রাষ্ট্রদূত গেছে কোনোদিন দেখছেন ফুলের তোড়া নিয়ে দাঁড়াতে? কিন্তু আমেরিকার রাষ্ট্রদূত আওয়ামী লীগের অফিসে গেলে আওয়ামী লীগের নেতারা ফুলের তোড়া নিয়ে হাজির হন। আবার যখন পরদিন তারা (্আওয়ামী লীগ) বুঝে যায়, আমেরিকানরা তাদের ভোট চুরির বিরোধী তখন তারা গালি দেয়। খসরু বলেন, বিএনপি নাকি বিদেশিদের দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাতে দেয়। আপনারা ফুলের তোড়া নিয়ে ওখানে কি গলাতে গিয়েছিলেন? আবার বের হয়ে এসে সুখবর দিচ্ছে রাষ্ট্রদূত এটা বলেনি, ওটা বলেনি। কি আনন্দ! তাহলে কে নাক গলালো? ফুলের তোড়া নিয়ে নাক গলাতে হয়? এই হচ্ছে আপনাদের দুরবস্থা। গতকাল বিকালে নগরের কাজীর দেউড়ি নূর আহমদ সড়কে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও হুম্মাম কাদের চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
আমীর খসরু ক্ষমতাসীন দলের উদ্দেশে বলেন, আপনারা কিভাবে যাবেন ঠিক করেন। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে যাবেন নাকি জনগণ আপনাদের বিতাড়িত করবে। আমরা কাউকে বিতাড়িত করার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে বিশ্বাস করি। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের ভোটের নির্বাচিত সংসদ ও নির্বাচন। এই কাজটাতে বিএনপি বিশ্বাস করে। এই কাজটা যদি আপনি করেন তাহলে খুব ভালো।
খসরু বলেন, গত নির্বাচনের মতো রাতের আঁধারে ভোট চুরি করে আবার ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রতিবাদ নয় প্রতিরোধ করবো। তিনি বলেন, এই সরকার জনগণের কাছে পরাজিত হয়ে এখন বেঁচে থাকার শেষ চেষ্টা করছে। অস্ত্র–শস্ত্র নিয়ে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশকে সাথে নিয়ে জনগণের লড়াইকে বন্ধ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। আপনাকে যেতে হবে। আপনি থাকতে পারবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি একটি অংশকে ব্যবহার করে থাকতে পারবেন না।
খসরু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে কিছু করতে পারেননি, তাই জোবাইদা রহমানের পেছনে লেগেছেন। এখন কি অপেক্ষায় শুধু জাইমা রহমান? এবার জাইমা রহমানকে নিয়ে সরকার কি উঠে পড়ে লাগবে? বাংলাদেশের মানুষ তাদের অনুপস্থিতিতে আপনার বিদায়ের ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া, জোবাইদা রহমান ও জাইমা রহমান এদের পথ রুখে দাঁড়াবার কোনো শক্তি বাংলাদেশে কারও নেই।
এস এম ফজলুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ ভোট চুরির নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে ওঠে পড়ে লেগেছে। তাদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলা দেওয়া হয়েছে। যা সরকারের প্রতিহিংসা চরিতার্থের নামান্তর।
মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, দুদক এখন শুধু সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান নয়, বিরোধীদল দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে। সব ক্ষেত্রে বিচারের নামে প্রহসন চলছে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সরকার তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানকে ‘মিথ্যা’ মামলায় সাজা দিয়ে মনে করেছে জিয়া পরিবারের আর কেউ নেই। কিন্তু তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমান হচ্ছেন বাংলাদেশের মানুষের নয়নের মনি। জিয়া পরিবারের সর্বশেষ সদস্যও যদি বেঁচে থাকে তাহলে তিনিই হবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। জাইমা রহমান আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী।
এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনার সরকার তারেক রহমানকে আগামী দিনের প্রধান প্রতিপক্ষ ভেবে রাজনীতি থেকে তাকে মাইনাস করার গভীর ষড়যন্ত্রে নেমেছে।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, তারেক রহমান সরকারের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের শিকার। তাকে বিপর্যস্ত ও বিপন্ন করার জন্য সরকার কূটচাল চালিয়েছে। সাজা দিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা পূরণ করেছে।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা্ব এম এ আজিজ, এনামুল হক এনাম, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এড. আবদুস সাত্তার, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, নুরুল আমিন, নূর মোহাম্মদ, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, সরওয়ার আলমগীর, কাজী সালাউদ্দিন, এরশাদ উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, মাহবুব আলম, এস এম আবুল ফয়েজ, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, মন্জুর আলম চৌধুরী মন্জু, মো. কামরুল ইসলাম।