আর্থার মিলার: সাধারণ নাগরিকের কণ্ঠস্বর

| বৃহস্পতিবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৮:১৩ পূর্বাহ্ণ

আর্থার মিলার। নাট্যকার এবং প্রাবন্ধিক ছিলেন। ছাত্রজীবনেই নাটক লিখে বেশ কয়েকটি পুরস্কার পান। পরে বেতার নাটক লেখা শুরু করেন। ইহুদী বিরোধী মতবাদ সম্পর্কে লেখা ফোকাস (১৯৪৬) তার একটি অন্যতম নাটক।
১৯১৫ সালের ১০ ফেব্রয়ারি নিউ ইয়র্ক নগরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম আর্থার অ্যাশার মিলার। মিলারের মায়ের ছিল পোশাক তৈরির কারখানা, বাবাও ছিলেন ব্যবসায়ী। কিন্তু ১৯৩০-এর অর্থনৈতিক মহামন্দার কারণে মিলারদের পরিবার সবকিছু হারায়। আর তখন থেকেই দারিদ্র্যের সাথে মিলারের পরিচয়। অভাব অনটন মিলারের ব্যক্তিজীবন এবং লেখালেখিকে প্রভাবিত করেছে। হতাশা উঠে এসেছে তাঁর লেখা নাটকগুলোর চরিত্রে। স্কুল পাস করে কিছুদিন একটি গুদামে কাজ করেন মিলার। এরপর টাকা জমিয়ে ভর্তি হন ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানে। সেখান থেকে তাঁর নাটক লেখার শুরু। আর্থার মিলারের লেখা প্রথম নাটক ‘দ্য ম্যান হু হ্যাড অল দ্য লাক’ ব্রডওয়েতে মঞ্চস্থ হয় ১৯৪৪ সালে। কিন্তু মিলারের প্রথম নাটক সাড়া জাগাতে ব্যর্থ হয়। দর্শকের অভাবে মাত্র চার সপ্তাহ পরই ব্রডওয়ে থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় নাটকটি। প্রথম নাটকের ব্যর্থতার কারণে বেশ হতাশ হয়ে পড়েন মিলার। লেখালেখি থেকে সরে যান। তিন বছর পর ‘অল মাই সন্স’ নিয়ে ফিরে আসেন মঞ্চে। ১৯৪৭ সালে নিউইয়র্ক ড্রামা ক্রিটিকস সার্কেল অ্যাওয়ার্ডে সেরা নাটকের পুরস্কার পায় মিলারের এই নাটক। ত্রুটিপুর্ণ যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণের একটি কারখানাকে ভিত্তি করে তৈরি হয় নাটকটির গল্প। এই নাটক লেখার ক্ষেত্রে হেনরিক ইবসেনের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন মিলার। এরপর ১৯৪৯ সালে মঞ্চস্থ হয় মিলারের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাটক ‘ডেথ অব এ সেলসম্যান’। মিলারের প্রথম তিনটি নাটকে একটা বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। সব নাটকেই বাবা এবং ছেলের সম্পর্ককে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এজন্য মিলারের এই তিন নাটককে বলা হয় ‘থিমেটিক ট্রিলোজি’। তার রচিত সবচেয়ে জনপ্রিয় নাটকগুলো হল অল মাই সন্স (১৯৪৭), ডেথ অব আ সেলসম্যান (১৯৪৯), দ্য ক্রুসিবল ও আ ভিউ ফ্রম দ্য ব্রিজ (১৯৫৫)। প্রথমোক্ত দুটি নাটক লেখার জন্য তিনি নিউ ইয়র্কের নাটক সমালোচনা সমিতির পুরস্কার লাভ করেন। ডেথ অব আ সেলসম্যান বইটির জন্য তিনি নাটকে পুলিৎজার পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮০ সালে মিলার সেন্ট লুইস বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েটস থেকে সেন্ট লুইস সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি ১৯৯৯ সালে ডরথি ও লিলিয়ান গিশ পুরস্কার, ২০০২ সালে প্রিন্স অস্টুরিয়াস পুরস্কার, এবং ২০০৩ সালে জেরুসালেম পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধভাষার মাসে নারীদের অবদানের কথা তুলে ধরা হোক