আনন্দ ও সম্প্রীতির উৎসব

আরিফ রায়হান | বুধবার , ২৭ এপ্রিল, ২০২২ at ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ

ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানেই খুশির উৎসব। ঈদ উৎসব আমাদের মানবজাতির জন্য নিয়ে আসে আনন্দের ফল্গুধারা। আনন্দের এই উৎসবে মানুষের মনে জাগ্রত হয় আবেগ, অনুভূতি ও মমত্ববোধ। অতীতের সব হিংসা বিদ্বেষ ভুলে মানুষ একে অপরের সাথে কোলাকুলি করে ছড়িয়ে দেয় ঈদের আনন্দ। ঈদের আনন্দ বড়দের চেয়ে বেশি দোলা দেয় ছোটদের মনে। ঈদ উৎসব খুশির বারতা নিয়ে আসে তাদের জীবনে। উৎসবটি আরো বেশি করে রঙিন হয়ে উঠে শিশু কিশোরদের নানা আয়োজনে। কেননা তাদের ঘিরেই ঈদের যত আনন্দ। ঈদের দিন নতুন জামা-জুতো পড়ে বড়দের সালাম করা, সেলামি নেওয়া, ফিন্নি-পায়েস, জর্দা-পোলাওয়ে ভুরিভোজন, নানার বাড়ি, এ বাড়ি সে বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া এ যেন এক মহাআনন্দ।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর ঘরবন্দি থেকে শিশুরা ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। শুধু ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়নি তারা মা বাবার সাথে মার্কেটে গিয়ে পছন্দের জামা-জুতোও কিনতে পারেনি। ঈদের দিন যেতে পারেনি নানার বাড়ি, আত্মীয়দের বাড়ি। খেতে পারেনি মজার মজার ফিরনি পায়েস। সালাম করে পায়নি ঈদের সেলামি। এ কষ্ট তাদের মন থেকে মুছবে না কোনদিন। তবে এবারের ঈদে নেই বিগত বছরের কভিডের বিধিনিষেধ কিংবা লকডাউন। মার্কেটে গিয়ে ঈদের পোশাক কেনার কোন বাধা নেই। বাধা নেই ঈদে বেড়ানোর। আহা কী আনন্দ!

ঈদের আনন্দে উদ্বেলিত হয় শিশু কিশোররা। তাদের এই আন্দটুকু উপভোগ করেন বড়রাও। তাই ঈদে ছোটদের মুখে হাসি ফোটাতে কার্পণ্য করেন না মা-বাবারা। এজন্য সবার আগেই কেনা হয় পরিবারের ছোট্ট সোনামণিদের ঈদের পোশাক। আবার কেনাকাটায় তাদের আবদারেরও শেষ নেই। তাদের পোশাকটা যেনতেন হলে চলবে না। হতে হবে রঙিন, চোখ জুড়ানো। ঈদের দিনক্ষণ বেশ ঘনিয়ে এসেছে। ইতোমধ্যে রোজা পঁচিশটা শেষ হতে চলেছে। আগামী সপ্তাহের সোম কিংবা মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হতে পারে মহাখুশির ঈদুল ফিতর। আর এরই মধ্যে পুরোদমে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। অনেকেই সেরে ফেলেছে ঈদের কেনাকাটা।

বাবা-মার সঙ্গে মার্র্কেটে ঘুরে ঘুরে ঈদের কেনাকাটা করার মজাই যেন আলাদা। এতে শিশুদের আনন্দঘন উপস্থিতি জমে উঠে শপিংমলগুলো। শিশুদের ঈদের আনন্দ ভরিয়ে তুলতে চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন বিপণিকেন্দ্র্রে হরেক রকম বাহারি পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফ্যাশন হাউসগুলো। নগরীর নিউমার্কেট, রিয়াজউদ্দিন বাজার, তামাকুমন্ডি লেইন, জহুর হকার মার্কেট, টেরিবাজার, আমিন সেন্টার, স্যানমার ওশ্যান সিটি, ইউনেস্কা, সেন্ট্রাল প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, আফমি প্লাজা, শপিং কমপ্লেঙ, ফিনলে, মতি টাওয়ার, স্বজন সুপার মার্কেট, ভিআইপি টাওয়ার মার্কেট, এ্যাপোলা শপিং কমপ্লেঙ, আখতারুজ্জামান সেন্টার, লাকী প্লাজা, ঝনক প্লাজাসহ ছোট বড় অনেক মার্কেটে বড়দের পাশাপাশি শিশুদের নানা রকম পোশাক সাজিয়ে রেখেছেন দোকানিরা। এতে প্রতিটি দোকানে শিশুদের জন্য রয়েছে আলাদা কিডস কর্ণার। যেখানে রয়েছে চমৎকার সব স্টাইলিশ পোশাকের বিপুল সমাহার। ছোট্টসোনামণি থেকে শুরু করে শিশু কিশোর-কিশোরীদের জন্য রয়েছে শার্ট, প্যান্ট, টি শার্ট, পাঞ্জাবি, জিন্স, ফ্রক, সিঙ্গেল, কামিজ, থ্রি-পিস, স্কার্ট-টপস, প্যান্ট-টপস, ও পাঞ্জাবিসহ অন্যসব পোশাক। ছোটদের পোশাকের রঙে মধ্যে রয়েছে সাদা, লাল, হলুদ, কমলা, সবুজ ও নীল। এছাড়া রয়েছে গোলাপি, টিয়া, বাসন্তী, খয়েরি, ফিরোজা। ফ্যাশনের আরো অনুষঙ্গ হিসেবে রয়েছে হাতঘড়ি ও সানগ্লাস।

এবারের ঈদে থাকবে গরমের প্রভাব। তাই ছোটদের ঈদ পোশাক অবশ্যই আরামদায়ক হতে হবে। সচেতন মা বাবারা বেছে নেন এমন পোশাক যাতে গরমেও তারা স্বস্তিতে বেড়াতে পারে। আবার ঈদের আনন্দ যেন মাটি না হয় সেদিকে দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো বিশেষ নজর রেখেছে। সুতি কাপড়ের বৈচিত্র্যময় ব্যবহার করেছে তারা। কাপড়ের মধ্যে প্রাধান্য দিয়েছে কটন জর্জেট, বেঙি ভয়েল, ভয়েল ও অ্যান্ডি কটন। চমৎকার সব ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে শিশুদের ঈদের পোশাকে। ঈদ একটি সম্প্রীতির উৎসব। ধনী-গরিব সবাই মিলেমিশে ঈদ উৎসবে মেতে উঠুক। মানবমনে সঞ্চারিত হোক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও আনন্দের ফল্গুধারা। দিনটি বার বার ঘুরে ফিরে আসকু আমাদের জীবনে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকটা ঈদের চাঁদ
পরবর্তী নিবন্ধস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কমিউনিটি ক্লিনিক যুগান্তকারী মডেল