আদরের “বিলু”

সুচিত্রা ভট্টাচার্য | বুধবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ

হীরা আর মুক্তা দুই বোন। হীরা চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে আর মুক্তা দ্বিতীয় শ্রেণীতে। ওদের গ্রামের বাড়িটা বেশ বড়। চারপাশে অনেক গাছ গাছালি আর বড় উঠোন। রোজ বিকেলে ওরা দুই বোন উঠোনে খেলা করে। বাড়িতে লোক বলতে হীরার মাবাবা, দাদাদাদীমা আর ওরা দুই বোন। একদিন বিকালে খেলার সময় হীরার চোখ পড়ে বাড়িতে ঢোকার রাস্তার মুখেই একটি ছোট্ট বিড়াল ছানা। দুজন একসাথে গিয়ে একটু দেখে নিল বিড়াল ছানা টিকে। হীরা মুক্তা কে বলল চল তাড়াতাড়ি গিয়ে দাদুভাইকে ডেকে আনি।দাদু এসে দেখে সত্যিই তো একটি ছোট্ট বিড়াল ছানা রাস্তার একপাশে মিউ মিউ স্বরে ডাকছে। হীরা দাদুকে বলল দাদু আমরা বিড়ালছানা টিকে বাড়িতে নিয়ে যেতে চাই। হীরা আর মুক্তার জোরাজুরিতে দাদু ভাই রাজি হলেন। বাড়িতে নিয়ে এসে হিরামুক্তা বিড়ালছানাটির নাম রাখল বিলু। তারা বিলুকে খুব যত্ন করতে শুরচ করলো। বাড়ির বারান্দার একপাশে একটি বড় বাটিতে প্রতিবেলায় বিলুকে খাবার দেয় তারা। পুরনো ছোট কম্বল আর কাপড় দিয়ে ছোট্ট একটা বিছানা পেতে দিয়েছে বিলুকে তাদের দুবোনের রুমের এককোনায়। কিছুদিনের মধ্যেই বিলু অনেকটা মোটা তাজা ও বড় হয়ে উঠল। হীরা মুক্তাকে স্কুল থেকে আসতে দেখলেই বিলু লেজ নাড়তে নাড়তে গা ঘেঁষে গিয়ে মিউমিউ করে। সন্ধ্যায় ওরা পড়তে বসলে টেবিলের নিচে কোনায় গিয়ে বিলু গুটিসুটি মেরে বসে থাকে। দাদীমা মাঝে মাঝে একটু বিরক্ত হলেও দাদু নাতনীদের এই পোষা প্রাণীটিকে কোনভাবেই অনাদর করতে পারেন না। বেলায় বেলায় বিলুকে নানা খাবার দাবার দেয়া হয় বলে বিলুর হাড়ি পাতিলে মুখ দিয়ে চুরি করে খাবার বদভ্যাস নেই। একদিন হীরা স্কুল থেকে এসে দেখে বিলুকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। হঠাৎ চোখ পড়ে বারান্দার এক কোণে হাত পা ছেড়ে ও কেমন নেতিয়ে পড়েছে। বিলুর মুখ থেকে লালা ঝরছে।হীরা তাড়াতাড়ি দাদুকে ডেকে নিযয়ে আসে। দাদু বিলুকে দেখে বলে সর্বনাশ ! ওকে তো খুবই অসুস্থ মনে হচ্ছে। এখনই পশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। দাদু বাড়ি থেকে বের হয়ে একটি রিকশা ডেকে আনে। হীরা একটি কাপড়ে বিলুকে জড়িয়ে নিয়ে দাদুর সাথে রিঙায় ওঠে। হাসপাতালে পশু ডাক্তার দেখে বলে, ও কোন বিষাক্ত পোকামাকড় বা খাবার খেয়ে ফেলেছে। ডাক্তার বিলুকে একটি ইনজেকশন দেয় কিছু ওষুধ। বাড়িতে আনার পর হীরা মুক্তার যত্নে তাদের আদরের পোষা বিলু আবার সুস্থ হয়ে ওঠে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও মা ও শিশু হাসপাতালের যৌথ সেমিনার
পরবর্তী নিবন্ধমায়ের ভালোবাসা