আজ থেকে চট্টগ্রামের আরো দুই কেন্দ্রে চীনা টিকাদান

নিবন্ধনধারীরাই পাবেন এ টিকা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১ জুলাই, ২০২১ at ৬:২০ পূর্বাহ্ণ

সিনোফার্মের তৈরি ৯১ হাজার ২০০ ডোজ চীনা টিকা পেয়েছে চট্টগ্রাম। টিকা প্রাপ্তির পর গত ১৯ জুন থেকেই চীনা এ টিকার প্রয়োগও শুরু হয়েছে চট্টগ্রামে। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কেন্দ্রে এ টিকাদান শুরু হয়। কেন্দ্রটিতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অগ্রাধিকার তালিকাভূক্ত অন্যদের টিকাদান কার্য়ক্রমও এখন চলমান রয়েছে। তবে চমেক হাসপাতাল কেন্দ্রের বাইরে এবার চট্টগ্রামের আরো দুটি কেন্দ্রে চীনা এ টিকাদান শুরু হচ্ছে। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি হাসপাতাল কেন্দ্রে আজ (বৃহস্পতিবার) থেকেই এ টিকাদান শুরু হচ্ছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অবশ্য, সবাই এ টিকা পাবেন না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের এ কর্মকর্তা। স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী- যারা চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে টিকা গ্রহনের জন্য আগে নিবন্ধন করেছিলেন, কিন্তু টিকার একটি ডোজও নিতে পারেন নি। এখন তারাই জেনারেল হাসপাতালে চীনা টিকার প্রথম ডোজ নিতে পারবেন। একই ভাবে বিআইটিআইডি হাসপাতাল কেন্দ্রের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশনা। যারা বিআইটিআইডি হাসপাতালে টিকা নিতে আগে নিবন্ধন করেছিলেন, কিন্তু টিকা নিতে পারেন নি। তারাই এখন বিআইটিআইডি হাসপাতালে টিকা নিতে পারবেন। তবে নিবন্ধিতদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যককে মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হচ্ছে জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, নিবন্ধিতদের মাঝে যারা মোবাইলে এসএমএস পাবেন, কেবল তারাই নির্ধারিত দিনে এসে টিকা গ্রহন করবেন। কেন্দ্র পরিবর্তনের কোন রকম সুযোগ নেই বলে জানান সিভিল সার্জন। তাছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অগ্রাধিকার তালিকাভূক্ত অন্যরাও নির্দেশনা অনুযায়ী টিকা নিতে পারবেন।
কারা পাবেন সিনোফার্মের টিকা : স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সিনোফার্মের এ টিকা প্রথম ডোজ হিসেবে দেয়া হচ্ছে। প্রথম ডোজ গ্রহীতাদের এ টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে এক মাস (২৮ দিন) পর। সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, সরকারি নার্সিং কলেজ, আইএইচটি ও ম্যাটস-এর শিক্ষার্থীরা এ টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এবার অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কেবল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের এ টিকা দেয়া হবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া করোনায় সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী, পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্য থেকে নিবন্ধন করেও কেউ যদি টিকা না পেয়ে থাকেন, তবে তারাও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ টিকার প্রথম ডোজ পাবেন। এর বাইরে যে কেন্দ্রে সিনোফার্মের টিকাদান চলবে, ওই কেন্দ্রে টিকা গ্রহনের জন্য পূর্বে অনলাইনে নিবন্ধনকারীরাও এ টিকা গ্রহনের সুযোগ পাবেন। আর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বড় প্রকল্পে কর্মরতদের পাশাপাশি মৃতদের দেহ সৎকারে নিয়োজিত কর্মী, চীনা নাগরিক এবং বিদেশগামী কর্মীদেরও এ টিকার অগ্রাধিকার তালিকায় রাখা হয়েছে। যদিও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিদেশগামী কর্মীদের প্রক্রিয়াগত আনুষ্ঠানিকতা শেষে অনলাইন নিবন্ধনের মাধ্যমে টিকা দেয়া হবে। তাদের নিবন্ধনের প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি বলে জানান সিভিল সার্জন। অবশ্য কয়েকদিনের মধ্যে তাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে সিভিল সার্জন আশা প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে দুই দফায় সবমিলিয়ে ৮ লাখ ডোজের সামান্য বেশি (অঙফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার) টিকা পায় চট্টগ্রাম। ৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম ডোজ টিকাদান উদ্বোধনের পর গত ৮ এপ্রিল থেকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রদান শুরু হয় চট্টগ্রামে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে- চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৪৫ হাজারের মতো টিকাগ্রহীতা তাদের দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। এর আগে চট্টগ্রামের (মহানগরসহ জেলায়) মোট ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬০ জন মানুষ টিকার প্রথম ডোজ নেন। হিসেবে প্রথম ডোজ নেয়া আরো প্রায় লক্ষাধিক টিকা গ্রহীতা দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছেন। এরই মাঝে প্রথম ডোজ গ্রহনের পর অনেকের সময়ের ব্যবধান তিন মাস পার হতে চলেছে। অনেকের আরো বেশি। কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ আদৌ পাবেন কী না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাতকানিয়া ইউএইচএফপিও ডা. ওসমানীকে সম্মাননা প্রদান
পরবর্তী নিবন্ধএবার সে-ই হলি ক্রিসেন্টের আইসিইউ সচলের চেষ্টা